পণ্য না দিলে ইভ্যালিসহ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে টাকা ফেরত দিতে হবে ১০ দিনে

স্টাফ রিপোর্টার: দু লাখ টাকার বাইক দেড় লাখে দেয়ার কথা বলে দেড় দু মাস আগে টাকা নেয়া? দু একজনকে অল্পদামে এসি ফ্রিজ বাইক দিয়ে অসংখ্য মানুষের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তার সুযোগ? কিছুটা হলেও এ সুযোগ কমলো। দেশে ই কমার্স নীতিামালা প্রণয়ন করে তা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করেছে। ফলে এখন থেকে আদিয়ান, ইভ্যালি, আলিশা মার্টসহ বিভিন্ন ই-কমার্স কোম্পানিতে অগ্রিম মূল্য পরিশোধের পর যেসব ক্রেতা পণ্য ডেলিভারি কিংবা মূল্য ফেরত কোনটিই সময়মতো পাচ্ছেন না তাদের জন্য সুখবর হলো পণ্য না দিলে ইভ্যালি–আলেশা মার্টদের টাকা ফেরত দিতে হবে ১০ দিনে। আর মূল্য পরিষদের পর দ্রুত পন্য সরবরাহ করতে হবে।
দেশে প্রথমবারের মতো জারি করা ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকায় এই শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেল রোববার এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে গ্রাহক মূল্য পরিশোধ করার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরবরাহকারীর কাছে পণ্য পৌঁছে দেবে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। এরপর তা ক্রেতাকে এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। ক্রেতা এবং বিক্রেতা একই শহরে থাকলে মূল্য পরিশোধের ৫ দিনের মধ্যে, আর ভিন্ন শহরে থাকলে ১০ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করতে হবে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে সরবরাহের সময় আরও কম রাখতে হবে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিক্রেতা কোনো কারণে নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক, মোবাইল ব্যাংকিং বা অন্য যে মাধ্যমে পণ্যের অগ্রিম মূল্য ক্রেতা পরিশোধ করেছেন সেই মাধ্যমেই তা ফেরত দিতে হবে। এছাড়া যেসব পণ্যের ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টি রয়েছে, সরবরাহের সময় সেগুলোর কার্ড ক্রেতাকে দিতে হবে। সেই কার্ডে উল্লেখ থাকতে হবে কত দিন এবং কোথা থেকে এই সেবা পাওয়া যাবে। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, ক্রেতার সহজে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুবিধার্থে পণ্যের মূল্য ও সব ধরনের করের কথা ই-কমার্সের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে বিক্রয়যোগ্য পণ্য বা সেবার যথাযথ বিবরণ, মূল্য, পণ্য পৌঁছানোসহ অন্যান্য খরচের কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। পণ্যের মেয়াদোত্তীর্ণের সময়ও জানাতে হবে। কোনো নকল বা ভেজাল পণ্য প্রদর্শন করা যাবে না। বহুস্তর বিপণন পদ্ধতিতে (এমএলএম) পদ্ধতিতে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে না। চিকিৎসা বা ওষুধসামগ্রী কেনাবেচার ক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের লাইসেন্স নিতে হবে। কোনো ধরনের নেশাজাতীয় পণ্য বিক্রি করা যাবে না এবং জুয়ার আয়োজনও করা যাবে না। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিক্রেতার ওয়েবসাইটে কোনো বিশেষ সফটওয়্যার থাকলে তা ক্রেতাকে আগেই জানাতে হবে। অভিযোগ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যাপ বা প্ল্যাটফর্মে ফোন নম্বর, ই-মেইল বা অন্যান্য যোগাযোগের মাধ্যম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। অভিযোগ রেকর্ডের ব্যবস্থাও থাকতে হবে। অভিযোগ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া পণ্যের বা সেবার বিষয়ে মতামত বা রেটিং জানানোর ব্যবস্থা রাখতে হবে ওয়েবসাইটে। এসব মতামত মুছে ফেলা যাবে না। আর নির্দেশিকা পালন না করলে অমান্যকারী প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স, কোম্পানি নিবন্ধন, ভ্যাট নিবন্ধন সরকার বাতিল করে দেবে।

 

Comments (0)
Add Comment