স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৮৭ জন। দেশে এর আগে একদিনে এতো রোগী শনাক্ত হয়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ৫৩ জন। এদিকে, দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে। সরকারি-বেসরকারি অনেক হাসপাতালে সিট খালি পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) শয্যা পেতে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে। ঢাকার করোনা হাসপাতালগুলোতে সাধারণ শয্যায় ৯২ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং আইসিইউতে ৮৯ দশমিক ৮০ শতাংশ রোগী ভর্তি রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩০ হাজার ৭২৪টি। এর মধ্যে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৮৭ জন। ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। দেশে এখন পর্যন্ত ৪৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৫টি নমুনা পরীক্ষা করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৪ জন। মোট নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ৫৩ জন। এর মধ্যে ৪৫ জন পুরুষ এবং ৮ জন নারী। ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৩৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৪ জন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছে।
মৃতদের অঞ্চল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে ৩৭ জন, চট্টগ্রামে ৯ জন, রাজশাহী ১ জন, রংপুরে ৩ জন এবং ময়মনসিংহে ৩ জন রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ২ হাজার ৭০৭ জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৭৮৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৮৮ জন, রংপুর বিভাগে ৬ জন, খুলনায় ৫০ জন, বরিশালে ১৬ জন, রাজশাহীতে ৩০ জন, সিলেটে ২৪ জন এবং ময়মনসিংহে ৫ জন রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, বাংলাদেশে গত বছরের ৮ মার্চ তিনজন করোনা ভাইরাসের রোগী পাওয়া যায়। এর পর যতোদিন যেতে থাকে ততই করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকে এবং জুন-জুলাই মাসে করোনার সংক্রমণের সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছায়। তখন একদিনে ৪ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হতো এবং ৫০-৬০ জনের মৃত্যু হতো ও শনাক্তের হার ছিল ২৪-২৫ শতাংশ। এর পর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে করোনার সংক্রমণের কমতে শুরু করে এবং কিছুদিনের মধ্যে ১০ শতাংশে নেমে এসে। শীত আসার আগে নভেম্বরে আবারও করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে এবং একপর্যায়ে সংক্রমণ ১৫ শতাংশে ওঠে। ডিসেম্বরের শেষদিক থেকে আবারও সংক্রমণ কমতে শুরু করে এবং ফেব্রুয়ারি মাসে করোনার সংক্রমণ হার ২-৩ শতাংশে নেমে আসে। কিন্তু মার্চের শুরু থেকে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকে। বর্তমানে করোনার সংক্রমণের হার ২৩ দশমিক ০৭ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরে তথ্য বলছে, করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দেশের করোনা ডেটিকেটেড হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে। বিশেষ করে ঢাকার করোনা ডেটিকেটেড হাসপাতালের রোগীর চাপ বেশি দেখা গেছে। করোনা রোগীর চিকিৎসায় ঢাকা মহানগরীতে ১০টি সরকারি ও ৯টি বেসরকারিসহ মোট ১৯টি হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালে সাধারণ শয্যা ৩ হাজার ২৭৮টি এবং আইসিইউ শয্যা ২৮৯টিসহ মোট ৩ হাজার ৫৬৭টি শয্যা রয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ শয্যায় ৩ হাজার ৩৩ জন এবং আইসিইউ শয্যায় ২৫৯ জন রোগী ভর্তি আছে। তথ্য বলছে, করোনা হাসপাতালে ২৪৫টি সাধারণ শয্যা এবং ৩০টি আইসিইউ শয্যা খালি রয়েছে। অর্থাৎ ঢাকার করোনা হাসপাতালগুলোতে শতকারা হিসাবে সাধারণ শয্যায় ৯২ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং আইসিইউতে ৮৯ দশমিক ৮০ শতাংশ রোগী ভর্তি রয়েছে।