জনশক্তি রপ্তানির প্রক্রিয়ার বিষয়ে একমত হতে না পারায় বৈঠক মুলতবি
স্টাফ রিপোর্টার: জনশক্তি রফতানির প্রক্রিয়ার বিষয়ে একমত হতে না পারায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার প্রক্রিয়া আরেক দফা অনিশ্চয়তায় পড়ল। কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই উভয় দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক গতকাল মুলতবি হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মাঝে সম্পাদিত জিটুজি প্লাস চুক্তির মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বৃদ্ধির কথা বলা হলেও হয়নি কোনো সমঝোতা স্মারক। কোনো নতুন দিনক্ষণ নির্ধারণ ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের এই মুলতবিতে মালয়েশিয়া জনশক্তি রফতানি আরেক দফায় ঝুলে গেল। গতকাল উভয় দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের টানা দ্বিতীয় দিনের ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, কয়েকটি ইস্যুতে একমত হতে পারেনি দুই দেশের কর্মকর্তারা। এজন্য দুই দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় আছেন তারা। তাই কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই উভয় দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক মুলতবি হয়ে গেছে। শিগগিরই নতুন দিনক্ষণ নির্ধারণ করে আবার বৈঠক হবে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে। বৈঠক সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানি সংক্রান্ত চুক্তি জিটুজি প্লাস এর মেয়াদ গতকাল শেষ হয়ে গেলে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী উল্লিখিত চুক্তির মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়াতে মৌখিক সম্মতির কথা জানান। কিন্তু এ বিষয়ের বাংলাদেশের প্রস্তাবনার বিপরীতে মালয়েশিয়ার সঙ্গে এমওইউ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। কারণ বৈঠকে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে যে প্রস্তাবনা দেয়া হয় সে বিষয়ে শেষ মুহূর্তে আপত্তি তোলেন বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ সচিব। মালয়েশিয়া দুই দেশে ২৫টি করে রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কথা প্রস্তাব করে। এতে বাংলাদেশের ২৫ এজেন্সির আওতায় ১০টি করে ২৫০ এজেন্সির নিয়োগের সুযোগ রাখার কথা বলা হয়। মালয়েশিয়ায় সেদেশের ২৫টি এজেন্সিই কাজ করার কথা বলা হয়। এ বিষয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হতে যাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে মালয়েশিয়ায় সেদেশের এজেন্সি সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে আবেদন তোলেন বাংলাদেশি কর্মকর্তা। মালয়েশিয়া তার নিজের দেশের সংখ্যা বাড়াবে কিনা এজন্য নিজেদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলে। শেষ মুহূর্তের এই আপত্তি অনিশ্চিত করে তোলে সম্ভাবনার শ্রমবাজারকে।
জানা যায়, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালু করতে দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের ভার্চুয়াল বৈঠক শুরু হয় গত মঙ্গলবার। গতকাল উভয় দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের টানা দ্বিতীয় দিনের ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। এতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং মালয়েশিয়া মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানানসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা স্ব স্ব দেশ থেকে ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেন। যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মনিরুছ সালেহীন, বিএমইটির মহাপরিচালক শামসুল আলম, বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল হাসান বাদল ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।