স্টাফ রিপোর্টার: প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সরকারি তহবিল ব্যবহারে কৃচ্ছ্র সাধন, খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে ব্যবস্থা নেওয়াসহ ২৫ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় আপনাদের বেতন-ভাতা হয়। জনগণ ট্যাক্স দেয় সেবা পাওয়ার জন্য। সেবা দেয়া প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব। সেজন্য সেবার মনোভাব নিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থেকে আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।’ গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিসিদের বিবেচনা করতে হবে, যখনই কোনো প্রকল্প নেয়া হয়, সেটা ওই এলাকার জন্য কতটুকু কার্যকর। এতে মানুষ কতটুকু লাভবান হবে এবং অপচয় কতটুকু বন্ধ করা যায়, সেদিকে আপনাদের নজরদারি থাকা উচিত। যেহেতু একটি জেলার দায়িত্ব আপনাদের ওপর। স্বাভাবিকভাবেই এগুলো আপনারা দেখবেন। কারণ, যত্রতত্র শুধু পয়সা খরচের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা আমি পছন্দ করি না।’ কোভিড মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের যেন সেটা মোকাবিলা করতে না হয় সেজন্যই আমরা কৃচ্ছ্র সাধনের ঘোষণা দিয়েছি। আমাদের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে ফেলেছি এবং সে ব্যাপারেও আপনারা সচেতন থাকবেন।’ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সরকারের অগ্রাধিকারে আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে। পতিত জমিতে ফসল ফলাতে হবে, কোনো জমি যেন অনাবাদি না থাকে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।’ এ সময় নিজেদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া এবং জনগণকে এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান শেখ হাসিনা।
জনকল্যাণমূলক কাজে বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দিতে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা কার্গো বিমান কেনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘নিজেদের জন্য কার্গো বিমান কেনার পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। কিন্তু অর্থনৈতিক এ অবস্থায় কিনতে পারছি না। ভবিষ্যতে কিনব পরিকল্পনা আছে।’ জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা কথাই বলবো, আমি আসার (ক্ষমতায়) পর আমাদের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এই যে জনমুখী বা জনগণের পাশে দাঁড়ানোর বা জনগণকে সেবা দেয়ার যে একটা আন্তরিকতা থাকা উচিত, সে আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়েছে, এই পরিবর্তন আমি দেখেছি আপনাদের মাঝে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা যারা জনপ্রশাসনে কাজ করেন, মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন, আপনাদের দায়িত্ব অনেক। শুধু চাকরির ক্ষেত্রে চাকরি করা না, জনসেবা দেয়া। এটা ছিলো সংস্থাপন মন্ত্রণালয়। আমি নাম দেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নামেরও একটা প্রভাব থাকে। নামের সঙ্গেও যেন কর্মক্ষেত্রটা আপনাদের বিস্তৃত হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছি, বিশেষ করে ২০০৯-এ যে রূপকল্প ঘোষণা দিয়েছি, সেগুলো বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে আপনাদের যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করেছেন। আন্তরিকতা ছাড়া বা দেশের মানুষের প্রতি কর্তব্যবোধ ছাড়া কখনো সফল হওয়া যায় না।’ এ সময় মাঠ প্রশাসনের কর্মকতাদের কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ, অগ্নিসন্ত্রাস বা গাছকাটা মোকাবিলায় মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন অত্যন্ত বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন।’ তিনি বলেন, মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ না বাধলে বাংলাদেশ আরও ‘এগিয়ে’ যেত। বৈশ্বিক পরিস্থিতি আর আর্থিক সংকট বিবেচনায় ২ লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার নতুন প্রকল্প আপাতত স্থগিত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা ডিসিদের উদ্দেশে বলেন, ‘আর্থিক সংকট অবশ্যই সারা বিশ্বের মতো আমাদেরও আছে। কিন্তু এমন পর্যায়ে নাই যে আমরা চলতে পারব না। আমাদের অগ্রাধিকার আমাদেরই বিবেচনা করতে হবে।’ জেলা প্রশাসকদের জনগণের ‘সেবক’ হওয়ার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা যতটুকু সুযোগ-সুবিধা পাই বা আপনারা সরকারি আমলা হিসেবে যে সুযোগ-সুবিধা পান, এগুলোর অবদান কিন্তু জনগণের। কারণ, জনগণের অর্থ এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকাতেই সবকিছু চলে। এর জন্য আমরা একেবারে তৃণমূল থেকে জনগণকে শক্তিশালী করে আনতে চাই। সরকারি অফিসগুলোতে সাধারণ মানুষ যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বিঘেœ যথাযথ সেবা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। সেবা প্রত্যাশীদের সন্তুষ্টি অর্জনই যেন হয় সরকারি কর্মচারীদের ব্রত।’ জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাঠদান কার্যক্রমের মানোন্নয়নে উদ্যোগী হতে হবে। অপেক্ষাকৃত দুর্গম এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।’ সরকার ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রতিটি গ্রামে শহরের সুবিধা এনে দিতে চায় মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাতে করে মানুষের শহরমুখী প্রবণতা কমার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামে অর্থনৈতিক প্রাণ চাঞ্চল্য তৈরি হয়। পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে উচ্চ প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তুলতে মাঠ পর্যায়ে বিশেষ নজর দিতে হবে।’
জেলা প্রশাসক সম্মেলন আয়োজনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ে সরকারের নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সমস্যা এবং এর থেকে উত্তরণের কৌশল নির্ধারণে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কার্যকর ভূমিকা পালন করে। জেলা প্রশাসক সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সঙ্গে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সরাসরি মতবিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে ২৫ দফা নির্দেশনা দেন। নির্দেশনাগুলো হলো-১. খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ, পতিত জমিতে ফসল ফলানো, কোনো জমি যেন অনাবাদি না থাকে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ; ২. নিজেরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া এবং জনগণকে এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা; ৩. সরকারি অফিসসমূহে সাধারণ মানুষ যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বিঘেœ যথাযথ সেবা পায় তা নিশ্চিত, সেবা প্রত্যাশীদের সন্তুষ্টি অর্জনই যেন হয় সরকারি কর্মচারীদের ব্রত; ৪. সরকারি তহবিল ব্যবহারে কৃচ্ছ্র সাধন; ৫. এসডিজি স্থানীয়করণের আওতায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনে তৎপরতা জোরদার; ৬. দেশে একজনও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। গৃহহীনদের জন্য গৃহনির্মাণ, ভূমিহীনদের কৃষি খাসজমি বন্দোবস্তসহ সব সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে যেন প্রকৃত অসহায়, দুস্থ ও সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ সুযোগ পায় তা নিশ্চিত করা। জমি ও ঘর প্রদানের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা; ৭. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের পাঠদান কার্যক্রমের মানোন্নয়নে উদ্যোগী হওয়া। অপেক্ষাকৃত দুর্গম এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেয়া; ৮. কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রসমূহ যেন কার্যকর থাকে তা প্রতিনিয়ত তত্ত্বাবধান করা; ৯. শিশু-কিশোরদের শারীরিক-মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে তাদের জন্য প্রত্যেক এলাকায় সৃজনশীল চর্চা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও ক্রীড়া সুবিধা নিশ্চিত করা; ১০. নাগরিকদের সুস্থ জীবনাচারের জন্য জেলা ও উপজেলায় পার্ক, খেলার মাঠ প্রভৃতির সংরক্ষণ এবং নতুন পার্ক ও খেলার মাঠ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া; ১১. পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে উচ্চ প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তুলতে কাজ করা; ১২. সরকারি দপ্তরসমূহের ওয়েবসাইট নিয়মিত হালনাগাদ করা। নিজ নিজ জেলার সরকারের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সাফল্য ওয়েবসাইটে তুলে ধরা; ১৩. জনসাধারণের মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতকরণে কাজ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার, গুজব ইত্যাদি রোধে উদ্যোগ নেয়া; ১৪. আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন কোনোভাবেই অবনতি না হয়, সেদিকে নজরদারি জোরদার করা; ১৫. মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে কেউ যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ থাকা; ১৬. মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দূর করতে হবে। নিরীহ ধর্মপ্রাণ মানুষ যাতে জঙ্গিবাদে জড়িত না হয় সে জন্য সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। যুব সমাজকে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত রাখার উদ্যোগ নেয়া; ১৭. বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, খাদ্যে ভেজাল, নকল পণ্য তৈরি ইত্যাদি অপরাধ প্রতিরোধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা; ১৮. বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে, কৃত্রিম সংকট রোধকল্পে ও পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার; ১৯. সরকারি জমি, নদী, বনভূমি, পাহাড়, প্রাকৃতিক জলাশয় প্রভৃতি রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ। ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যে নতুন সরকারি প্রতিষ্ঠান স্থাপনে ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণে প্রাধান্য; ২০. নিয়মিত নদী ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্য বৃদ্ধি করতে হবে। সøুইস গেট বা অন্য কোনো কারণে যেন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা। বিশেষ করে জলাবদ্ধতায় যেন উৎপাদন ব্যাহত না হয় তা নিশ্চিত করা; ২১. বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় তালগাছ রোপণ; ২২. পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নতুন নতুন পর্যটন স্পট গড়ে তোলা; ২৩. জেলার নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষা এবং জেলাভিত্তিক বিখ্যাত পণ্যসমূহের প্রচার, বিপণন এবং ব্রান্ডিং করা; ২৪. জনস্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে রেখে সেবার মনোভাব নিয়ে যেন সরকারি দপ্তরগুলো পরিচালিত হয়, সে লক্ষ্যে মনিটরিং জোরদার এবং ২৫. জেলার সব সরকারি দপ্তরের কার্যক্রমসমূহ যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ তথা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে ডিসিদের ব্রতী হওয়া। তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। সম্মেলনে বিভাগীয় কমিশনারদের পক্ষে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরুল্লাহ এবং জেলা প্রশাসকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন নরসিংদীর জেলা প্রশাসক আবু নাঈম মোহাম্মদ মারুফ খান ও বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভিন তিবরিজি। সম্মেলনে স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক উন্নয়নের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। আগামী মাসেই জাতীয় গ্রিডে ভোলার গ্যাস এদিকে, মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন শেষে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিশ্ববাজারে গ্যাসের উচ্চমূল্য এবং দেশে সরবরাহ সংকটের মধ্যে ভোলায় নতুন একটি কূপে গ্যাসের বড় মজুতের সন্ধান মিলেছে, যেখান থেকে দিনে ২ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, দ্বীপ জেলা ভোলায় উত্তোলিত প্রাকৃতিক গ্যাস আগামী মাসেই জাতীয় গ্রিডে আনা হবে। তবে পাইপলাইনে নয়, আপাতত সিএনজিতে রূপান্তর করে কনটেইনারে ভরে মূল ভূখন্ডে এনে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে। ডিসি সম্মেলনে সরকারি অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনে সৌর প্যানেল স্থাপন করে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়াতে ডিসিদের নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের উদ্দেশে আমরা বলেছি যে, চলতি বছরটি আমাদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের বছর। আগামী মাস থেকে সেচ মরসুম, তারপর রোজার মাস শুরু হবে। বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের দামের অবস্থাও ঊর্ধ্বমুখী। সবকিছু মাথায় নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’ চলমান সংকটকালে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে হাসপাতাল, সেচ, শিল্প, সার কারখানা অগ্রাধিকার পাবে বলে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে পরিত্যক্ত জমিগুলো সৌর বিদ্যুতের আওতায় নিয়ে আসা যায় কি না, সে বিষয়ে নজর দিতে বলেছি ডিসিদের।