জনগণ ও বহির্বিশ্বের কাছে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতে হবে

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল

স্টাফ রিপোর্টার: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যাত্রা কুসুমাস্তীর্ণ নয় মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘জনগণ ও বহির্বিশ্বের কাছে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতে হবে। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘শুধু আমাদের দৃষ্টিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করলে হবে না। আমাদের দিকে সমগ্র বিশ্ব তাকিয়ে আছে। এই নির্বাচন যদি সুষ্ঠু, সুন্দর এবং গ্রহণযোগ্য না করতে পারি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। বাংলাদেশের সব বিষয়, বিশেষ করে আর্থিক, সামাজিক, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবকিছু থমকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন না হলে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে বাংলাদেশ।’
গতকাল রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তারা। ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরী, ইটিআই মহাপরিচালক এস এম আসাদুজ্জামানসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রের আগ্রহ রয়েছে উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, দেশগুলোর প্রতিনিধিরা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বারবার দেখা করে তাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। তারা আশা করে, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। তারা যখন আশা করে, তখন তা বেশ শক্তভাবেই করে। তাদের আশা করাটা অন্যায় নয়।
সিইসি বলেন, সাধারণ নির্বাচন খুব উৎসবমুখর পরিবেশে হয়। কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃত্বের একটা অংশ নির্বাচন বর্জন করছে। ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করা হয়েছে, সহিংসতা হয়েছে। সেটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে কিছু বিতর্ক হয়েছে, সার্বিকভাবে অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ ছিল না।
এবারের নির্বাচনের কিছু চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে সিইসি বলেন, নির্বাচন আমাদের দ্বারপ্রান্তে। কুসুমাস্তীর্ণ পথে আমরা এগোচ্ছি না। কিছুদিন ধরে বিতর্ক চলছে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে, নির্বাচন প্রশ্নে বাকিবত-া হচ্ছে, সহিংসতাও হয়েছে। আমাদের বেশি মনোযোগী হতে হবে আকেরটি কারণে, রাজনৈতিক অঙ্গনে কিছুটা বাকিবত-া আছে। যে কোনো মূল্যে আমাদের প্রমাণ করতে হবে যে, একটা সরকার থাকা অবস্থায় নির্বাচন কমিশন ভালো নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে। ইসিকে বলা হয় ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বডি। সরকার বাধ্য ইসিকে সহায়তা করতে। সরকারের সহায়তা ছাড়া আমরাও নির্বাচন করতে পারি না।
নির্বাচনি কর্মকর্তাদের দায়িত্বের বিষয়ে সজাগ থাকার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ব্যালট বাক্সে সিল মেরে ভরে দেওয়া, কেন্দ্র দখল, কেন্দ্রের ভেতরে পেশি শক্তির প্রভাব পরিবেশ নষ্ট করে। কেন্দ্রের ভেতরে অরাজকতা হলে ভোটাররা কেন্দ্র থেকে ফিরে যাবে। নিরপেক্ষ ভোট না হলে তারা ভোটটাকে প্রত্যাখ্যান করে চলে যাবে। তিনি বলেন, নির্বাহী হাকিমরা সচরাচর ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করবেন না। কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার প্রয়োজনে নির্বাহী হাকিমদের তলব করবেন। শৃঙ্খলা রাখতে পারছে না, কেন্দ্র দখল করার উপক্রম হয়েছে, তখন নির্বাহী হাকিম ও পুলিশের ডাক পড়বে। এছাড়া অননুমোদিত কাউকে ভেতরের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে।