স্টাফ রিপোর্টার: ‘অনেক স্বপ্ন ছিলো মেয়েকে নিয়ে। লেখাপড়া শিখে একদিন অনেক বড় হবে। মেয়ে ঠিকই বড় হয়েছিলো। কিন্তু কেন যেন অকালেই সবাইকে কাঁদিয়ে সে বিদায় নিলো পৃথিবী থেকে।’ মাগুরায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) লাবণী আক্তারের মৃতদেহ দাফনের পর এভাবে কথাগুলো বলছিলেন তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক শফিকুল আজম। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে শ্রীপুর ইউনিয়নের সারঙ্গদিয়া গ্রামে প্রথম নামাজে জানাজা এবং পরে নিজবাড়ি কাদিরপাড়া ইউনিয়নের বরালিদহ গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে রাত পৌনে ১১টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মাগুরা হাসপাতাল মর্গ থেকে ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ কর্মকর্তা লাবণী আক্তারের মরদেহ সারঙ্গদিয়া গ্রামে আনা হয়।
কথা বলতে গিয়ে কণ্ঠস্বর বারবার আটকে যাচ্ছিলো পুলিশ কর্মকর্তা লাবণী আক্তারের বাবা শফিকুল আজমের। নিজের সদ্য প্রয়াত মেয়ের দুই কন্যা সন্তানের হাত ধরে তিনি বললেন, অনেক কষ্ট করে মেয়েকে মানুষ করেছিলাম। এখন বয়স হয়েছে। আর কয়দিন এভাবে বেঁচে থাকবো। এখন এই ছোট্ট দুটো নাতনিকে কীভাবে মানুষ করবো সেটাই ভাবছি। লাবণী আক্তারের ছোট ভাই বিসিএস ৩১ ব্যাচের তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা হাসনাতুল আজম প্রিন্স বলেন, আপু আমাকে অনেক উৎসাহ দিতেন। অথচ নিজের জীবনটা কেন এভাবে শেষ করে দিলেন, জানি না।
পুলিশ কর্মকর্তা লাবণী আক্তারের বড় মেয়ে তাসনিয়ার বয়স আট বছর আর ছোট মেয়ে তাসকিয়ার বয়স মাত্র চার বছর। বড় মেয়ে তাসনিয়া বললো মা নেই। তবে ছোট মেয়ে তাসকিয়া শুধু ফেল ফেল করে তাকিয়ে রয়েছে সবার দিকে। সে কোনো কথা বলছে না। মা কোথায় জানতে চাইলে কোন উত্তর না দিয়ে কেঁদে ফেললো মাত্র চার বছর বয়সী তাসকিয়া।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের সারঙ্গদিয়া গ্রামে নানা বাড়িতে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন খুলনায় কর্মরত ডিবির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার খন্দকার লাবণী আক্তার। গত ১৭ জুলাই সাত দিনের ছুটি নিয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন।