স্টাফ রিপোর্টার: চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে সচিবালয় অবরুদ্ধ করে ভাঙচুর এবং শিক্ষার্থী ও সেনা সদস্যদের ওপর হামলার অভিযোগে রাজধানীর রমনা, শাহবাগ, পল্টন ও বিমানবন্দর থানায় চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ চার মামলায় প্রায় ১০ হাজার অজ্ঞাত আনসার সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া চার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ৩৮৮ জনকে। গতকাল সোমবার বিকালে গ্রেফতারকৃত আনসার সদস্যদের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে। আদালত সূত্র জানায়, গতকাল দুপুরে রমনা, শাহবাগ, পল্টন ও বিমানবন্দর থানার পৃথক চার মামলায় তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশাররফ হোসেন তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে জানা গেছে, শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেফতার ১৮৯ জন, রমনা থানায় ৯৮ জন, পল্টন থানায় ৯৫ জন ও বিমানবন্দর থানার মামলায় ছয় আনসার সদস্যকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে আনা হয়। এ চার থানার মামলায় অন্তত ৪২৬ জনের নামোল্লেখ করে আসামি করা হয়। এছাড়াও অন্তত ১০ হাজার অজ্ঞাতপরিচয় আনসার সদস্যকে আসামি করা হয়। এসব মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্ট রাত ৯টার দিকে সচিবালয়ের সামনে সাধারণ আনসার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পালটাধাওয়া শুরু হয়। এ সময় কিছু আনসার সদস্য পল্টন মডেল থানাধীন জিরোপয়েন্ট এলাকায় চাকরি জাতীয়করণসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজপথ অবরোধ করে রাখে। পুলিশ তাদের ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। তারা সে অনুরোধ না শুনে রাস্তা অবরোধের মাধ্যমে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টারা তাদের দাবিদাওয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সাধারণ আনসারদের পক্ষে কয়েক জন প্রতিনিধির সঙ্গে তাৎক্ষণিক বৈঠক করেন এবং আংশিক দাবি পূরণ করেন। এছাড়াও অন্যান্য যৌক্তিক দাবিগুলো একটি কমিটি গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। কিন্তু সাধারণ আনসাররা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, তথা বাংলাদেশ সচিবালয়ের চারপাশে অবস্থান করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ ঐ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে এবং জিরোপয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করবে বলে বিভিন্ন সেøাগান দিতে থাকে। মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয় রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, তথা কেপিআই জানা সত্ত্বেও আনসার সদস্যরা কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে সেখানে অবস্থান করতে থাকে। একপর্যায়ে রাত ৯টা ৩০ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ঘটনাস্থলে গেলে তারা ছাত্রদের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অনেক ছাত্র ও পথচারী গুরুতর আহত হয়। আনসার সদস্যরা রাস্তার ওপর আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ঐ পথে চলাচলরত বিভিন্ন গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকে। এসব মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা, অগ্নিসংযোগ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ আনা হয়েছে।