স্টাফ রিপোর্টার: গ্রামীণ সড়কের বিষয়ে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি উল্লেখ করেছেন, গ্রামীণ এলাকায় অনেক উন্নয়ন করা হচ্ছে, রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলো মানসম্পন্নভাবে হচ্ছে কি না, তা মনিটরিং করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন পরিকল্পনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী খুবই গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন যে আমরা অনেক কাজ করছি গ্রামীণ রাস্তা ও গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়নে। কাজগুলো সত্যিকার হচ্ছে কি না, মানসম্মত হচ্ছে কি না, সেগুলো ভালো করে যাচাই করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কাজের কোয়ালিটি যেন ঠিক থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। বিটুমিনের কোয়ালিটি ঠিক রাখতে হবে। তাছাড়া রাস্তায় যেন পানি জমে না থাকে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। কোথায় কতোটুকু রাস্তা প্রয়োজন হবে, সে বিষয়ে গ্রামীণ সড়ক নিয়ে একটি মাস্টারপ্ল্যান করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাছাড়া গ্রামীণ সড়ক তৈরির সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে বলেছেন। গতকাল একনেক সভায় মোট পাঁচটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে, এর মধ্যে দুটি সংশোধিত। নতুন প্রকল্পে বরাদ্দ এবং সংশোধিত প্রকল্পে বাড়তি বরাদ্দ মিলিয়ে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৭ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৭৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সভায় ৭৯৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে যমুনা নদীর ডান তীরের ভাঙন তেকে গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলাধীন কাতলামারী ও সাঘাটা উপজেলাধীন গোবিন্দি এবং হলদিয়া এলাকা রক্ষা প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবারও বলেছেন নদীপথ ঠিক রাখতে নিয়মিত ড্রেজিং করতে। ডুবোচর থাকলে সরিয়ে ফেলা, সংযোগ নদীগুলোর প্রবাহ ঠিক রাখা, বাঁধের পাশে পানির বাফার জোন করা হয়, যাতে করে শুষ্ক মরসুমে পানির সমস্যা না হয়। তাছাড়া আগামী বর্ষা আসার আগেই কাজের বেশির ভাগ শেষ করার জন্য নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় ১ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গুরুত্বপূর্ণ পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প : বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলা প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় বেড়েছে ৩০৫ কোটি টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া ৫ হাজার ৯০৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লি সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এবং সাম্প্রতিক বন্যা ও অতিবর্ষণের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫৫টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান, বন্যা ও অতিবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লি অবকাঠামোগুলো জলবায়ু সহনশীল টেকসই অবকাঠামো হিসেবে নির্মাণ করা হবে। এর পাশাপাশি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে অর্থনৈতিক গতিশীলতা আনয়নের ক্ষেত্রে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সভায় ২২৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে জামালপুরে শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লি নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় বেড়েছে ১০২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।