স্টাফ রিপোর্টার: অনলাইনে প্রতারণার অভিযোগে দুই নাইজেরিয়ান নাগরিকসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের সাইবার অপরাধ তদন্ত বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা অ্যালবার্ট ইকেচুকু ওরফে ইয, ওকেচুকু ওরফে চুকওয়ামা এবং বাংলাদেশি মোছাম্মত নূপুর খাতুন। গতকাল তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে ডিবি পুলিশ। এছাড়া অপর একটি প্রতারণার ঘটনায় সিআইডি পুলিশ আমজাদ হোসেন কিরণ নামে এক জনকে গ্রেফতার করে।
দুই নাইজেরিয়ান নাগরিকসহ তিনজনের কাছ থেকে পুলিশ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ডিজিটাল আলামত, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ এবং অনেকগুলো ব্যাংকের স্লিপ উদ্ধার করেছে। পুলিশের দাবি, এ চক্রটি গত দুই বছরে কোটি টাকার অধিক হাতিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় পল্লবী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। এ ব্যাপারে সাইবার অপরাধ তদন্ত বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম বলেন, দুই নাইজেরিয়ানসহ তিন জনকে বুধবার রাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এদের মধ্যে ওকেচুকুর প্রধান কাজ ছিলো অ্যালবার্টকে মোবাইল সিম সরবরাহ করা। তাছাড়া বিভিন্ন ফেসবুক আইডিতে অ্যালবার্টের মতো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতো এবং তাকে সরবরাহ করত। সে নূপুরকে সব ধরনের সহযোগিতাও করতো।
এদিকে সিআইডির সাইবার ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, গ্রেফতারকৃত আমজাদ হোসেন কিরণ অনলাইনে ব্যবসার ডিলারশিপ নিতে চেয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পণ্যের অর্ডার দিতেন। পণ্য পাওয়ার পর যোগাযোগ বন্ধ করে পণ্যগুলো বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নিতেন তিনি। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার যশোর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
রেজাউল মাসুদ আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনে বিভিন্ন ব্যবসার ডিলারশিপ নেয়ার পোস্ট দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে যশোর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা কিরনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথমে কিছু নমুনা (পণ্যের স্যাম্পল) কুরিয়ারে পাঠাতে বলতেন এবং বিকাশে পণ্যের মূল্য পরিশোধ করে দিতেন। পরে চাহিদা আছে জানিয়ে বড় লটে পণ্য পাঠাতে বলতেন তিনি। মালামাল পাঠিয়ে দিলেই কিরণ ঐ ব্যবসায়ীর সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বন্ধ করে দিতেন। পণ্য পাওয়ার পর ব্যবসায়ীর মোবাইল নম্বর ব্লাকলিস্টে ফেলতেন এবং ফেসবুক আইডি ব্লক করে দিতেন।
বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি কিরণ অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। প্রতারণার জন্য তিনি দূরের ব্যবসায়ীদের টার্গেট করতেন যাতে ওই ব্যবসায়ী তাকে খুঁজে না পান। আসামি কিরণের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।