স্টাফ রিপোর্টার: পদ হারানো তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান দেশ ছেড়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটের এমিরেটসের ফ্লাইটে ওঠেন মুরাদ হাসান। গন্তব্য কানাডার টরেন্টো। এর আগে তিনি রাত ৯টা ২৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে পৌঁছান। একাধিক গোয়েন্দাসূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। দেশ ছাড়ার জন্য তিনি বুধবার আত্মগোপনে থাকাবস্থায় টিকিট কাটেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ডা. মুরাদ হাসানের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল সেটি পদত্যাগের দিন মঙ্গলবারই বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংসদ-সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে বলেন, এ সম্পর্কে তিনি জানেন না। এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এগুলো আমার জানা নেই। উনি বিদেশ যাবেন নাকি স্বদেশে থাকবেন, সেটা তার ব্যাপার। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই।’ আলাদা একটি সূত্র জানায়, ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিটও দায়ের হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মুখে বিতর্কিত এ নেতা দেশত্যাগ করলেন।
ডা. মুরাদ হাসানের একাধিক অডিও-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ঢাকাই সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপের ওই অডিওতে মুরাদ হাসানকে অশ্লীল কথাবার্তা ও নায়িকাকে ধর্ষণের হুমকি দিতে শোনা যায়। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও সরকার। এরপর সোমবারই ডা. মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র জমা দেন মুরাদ হাসান। ওইদিন বিকেলেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পর প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে।
ডা. মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য। তার বাবা প্রয়াত মতিউর রহমান তালুকদার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। বেশকিছু দিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত বক্তব্য এবং কর্মকা-ের কারণে ডা. মুরাদ সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। পদত্যাগের দিনই জামালপুর আওয়ামী লীগ থেকে ডা. মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া তার আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে দলের আগামী কার্যনির্বাহী সংসদীয় বৈঠকে।