গাংনী প্রতিনিধিঃ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে মাক্স ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই মেহেরপুর গাংনী করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় ঘর থেকে বের হওয়া মানুষের মাক্স ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আবারও লাঠি হাতে মাঠে নেমেছেন গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম। ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বদরুল আলম ও পৌর কর্মচারীদের সাথে নিয়ে তিনি বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় চলাচল করা মানুষের মাক্স পরতে বাধ্য করেছেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে তিনি লাঠি হাতে একই স্থানে দাঁড়িয়ে ঘর থেকে বিনা কারণে বের হওয়া মানুষের সচেতন করেছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বলা হয় “আপনার সুরক্ষা আপনার হাতেই”। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আর কোন উপায় নেই। বিশেষ করে ঘর থেকে বের হলেই পরতে হবে মাক্স। কারও সাথে সাক্ষাৎ বা কোন কাজে মিলিত হওয়ার প্রয়োজন হলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গাংনী উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় উপজেলা নির্বাহি অফিসার সভাকক্ষে। সভায় উপস্থিত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে ঘর থেকে বের হওয়া ও কর্ম ক্ষেত্রে শতভাগ মানুষের মাক্স ব্যবহার নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী বিকেলে মাঠে নামেন গাংনী পৌর মেয়র। মাক্স ব্যবহার না করায় পথচারী ও যানবাহনে থাকা মানুষকে করা হয় বিভিন্ন প্রকার জেরা। তাৎক্ষণিকভাবে মাক্স কিনে তা মুখে পরতে বাধ্য করেন পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম। একই সাথে হ্যান্ড মাইক নিয়ে মানুষের মাঝে সচেতনতার বার্তা দেন ৭নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পৌর কৃষক লীগ সভাপতি বদরুল আলম।
গতকালের এই কর্মসূচির খবর পেয়ে বদলে যায় গাংনী শহরে মানুষের চলাচলের চিত্র। মাক্স বিহীন ঘর থেকে বের হওয়া অনেকেই অলিগলি রাস্তা দিয়ে লুকিয়ে ফিরেছেন গন্তব্যে। যারা মেয়র-কাউন্সিলরদের জেরার মুখে পড়েছেন তারা মাক্স পরার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। অপরদিকে অনেকেই বাস স্ট্যান্ড থেকে মাক্স কিনে পরে ফিরেছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।
এ প্রসঙ্গে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, মাক্স বিহীন কেউ ঘর থেকে বের হয়ে পৌর এলাকায় প্রবেশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাংনী পৌর এলাকা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মুক্ত রাখতে মাক্স পরানো কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বদরুল আলম বলেন, যারা বাইরে থেকে এলাকায় ফিরছেন তাদেরকে কোরিন্টিন করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আমরা পৌর পরিষদ থেকে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।
প্রসঙ্গত, মেহেরপুর জেলা রেড জোনের প্রাথমিক তালিকা থেকে গ্রীণ জোনে পড়েছে। ফলে লকডাউন হচ্ছেনা মেহেরপুর জেলা। তবে জেলায় দিনদিন সংক্রমণ বাড়ছে। এমন অবস্থাতেও ঘর থেকে বের হওয়া বেশিরভাগ মানুষ ব্যবহার করছে না মাক্স। পৌর মেয়র এর গতকালের এই উদ্যোগে পাল্টাতে শুরু করেছে গাংনী শহরে বের হওয়া মানুষের চিত্র। বাধ্য হচ্ছেন তাই অনেকে বাদ পড়া শুরু করেছেন।