ইলিয়াস কাঞ্চন-শওকত মাহমুদের নেতৃত্বে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’

স্টাফ রিপোর্টার: চিত্রনায়ক ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করল নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’। নতুন দলের কমিটিতে সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, মহাসচিব শওকত মাহমুদ ও মুখপাত্র হয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলন। সর্বশেষ ২০২২-২০২৪ সেশনে ইলিয়াস কাঞ্চন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একুশে পদক, চলচ্চিত্র ও বাচসাস পুরস্কারেও ভূষিত হন। ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশে’র মহাসচিব শওকত মাহমুদ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ২০২৩ সালের ২১ মার্চ বিএনপি থেকে বহিষ্কার হন তিনি। নতুন দলটির দলীয় সেøাগান ‘গড়ব মোরা ইনসাফের দেশ’। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নতুন রাজনৈতিক দলটির আত্মপ্রকাশের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। দলের নাম ঘোষণা ও ইশতেহার পাঠ করেন শওকত মাহমুদ। নতুন এ দলে রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি সাংবাদিক, আইনজীবী, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন অঙ্গনের ব্যক্তিরা স্থান পেয়েছেন। ১৯৯৩ সালে স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর থেকে ইলিয়াস কাঞ্চন সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলেন। বিভিন্ন সময়ে তাকে নির্বাচন করার আহ্বান জানানো হলেও এবারই প্রথম সরাসরি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হলেন। শওকত মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, প্রতিটি গণঅভ্যুত্থান, বিপ্লব ও আন্দোলনের পরে সেসব সংগ্রামী চেতনায় নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের অভ্যুদয় ঘটে। যেহেতু রাষ্ট্র সাজবে একাত্তর ও চব্বিশের গণজাগরণের চেতনায়, সেই আঙ্গিকে নতুন দলের আবির্ভাব অনিবার্য। জাতির এই মাহেন্দ্রক্ষণে জাতীয় প্রত্যাশায় সকল প্রকার বৈষম্য, ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে জনকল্যাণ, ইনসাফ, সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে এবং গর্বিত জাতীয়তাবোধ দৃঢ় করতে তারা আজ নতুন দলের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিচ্ছেন। অনুষ্ঠানে দলটির ২৭ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তাতে উল্লেখ করা হয়, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল হক হাফিজ, ওয়ালিউর রহমান খান, রেহানা সালাম, মো. আব্দুল্লাহ, এম এ ইউসুফ ও নির্মল চক্রবর্তী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম আসাদুজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব এ বি এম রফিকুল হক তালুকদার রাজা, আল আমিন রাজু ও নাজমুল আহসান। এছাড়া সমন্বয়কারী নুরুল কাদের সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ আহমেদ, প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক গুলজার হোসেন ও প্রচার সম্পাদক হাসিবুর রেজা কল্লোল। সম্মানিত সদস্য হিসেবে আছেন মেজর (অব.) ইমরান ও কর্নেল (অব.) সাব্বির। উপদেষ্টা হিসেবে আছেন শাহ মো. আবু জাফর, মেজর (অব.) মুজিব, ইকবাল হোসেন মাহমুদ, ডা. ফরহাদ হোসেন মাহবুব, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, আউয়াল ঠাকুর, তৌহিদা ফারুকী ও মামুনুর রশীদ। বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক শওকত মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত দূরত্ব হয়েছে, সেটার কারণ হচ্ছে, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার অনুমতিতে ২০১২ সালে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি গঠন করেছিলাম। সেই কমিটি যখন আমরা পুনরুজ্জীবত করি তখন বলেছিলাম যে, ইনসাফ কায়েম কমিটি একটা গণঅভ্যুত্থান করতে চায়, যে গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা থাকা প্রয়োজন। আমাদের এই আহ্বানকে বিএনপির কোনো কোনো নেতা ভুল বুঝেছিলেন। তারা মনে করেছেন যে, আমরা দলকে বোধ হয় ভাঙতে চাই। সে কারণে আমার সঙ্গে বিএনপির বিচ্ছেদ ঘটে। তবে ২০২৪ সালে একদলীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন শওকত মাহমুদ।