স্টাফ রিপোর্টার: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর রেকর্ড একের পর এক ভাঙছে। শুরুর দিকে অল্পকিছু আক্রান্ত ও দু-একজনের মৃত্যুর খবরে সারাদেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তো। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় মহামারী করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা ভয়ঙ্কর থেকে ভয়ঙ্কর হয়েছে। দিনকে দিন সংক্রমিত রোগী ও এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়েছে। দেশে গতবছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। শুরুর দিকে শুধু স্বাস্থ্য অধিদফতরের আইইডিসিআরের ল্যাবরেটরিতে করোনা শনাক্ত নমুনা পরীক্ষা হতো। বর্তমানে দেশের ৬৩৯টি সরকারি-বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৫৮৮ জলের নমুনা পরীক্ষায় ১২ লাখ ১০ হাজার ৯৮২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে প্রথম রোগীর মৃত্যু হয়। গতকাল বুধবার পর্যন্ত মহামারী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সর্বমোট ২০ হাজার ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা থেকে মন্ত্রী, এমপি, সচিব, ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, চিকিৎসক, শিক্ষক, গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার কেউ রেহাই পাননি। এ যাবৎকাল পর্যন্ত করোনায় মৃত ২০ হাজারেরও বেশি মৃত্যুর দেশের কোথায়, কোন বিভাগের কোন জেলায় কতো জনের মৃত্যু হলো তা অনেকেই হয়তো জানে না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের করোনার নমুনা পরীক্ষা ও শনাক্তের তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, সর্বমোট মৃত ২০ হাজার ১৬ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চসংখ্যক ৯ হাজার ২৭৩ জন রয়েছেন। আর সর্বনিম্ন ময়মনসিংহ বিভাগে ৫২২ জনের মৃত্যু হয়।
ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা মহানগরে ছয় হাজার ৩২৩ জন, ফরিদপুরে ৩৩০ জন, গাজীপুরে ৩৮৭ জন, গোপালগঞ্জ ১৫৩ জন, কিশোরগঞ্জে ১৯২ জন, মাদারীপুরে ১৩৪ জন, মানিকগঞ্জে ১৩৪ জন, মুন্সিগঞ্জে ২৯১ জন, নারায়ণগঞ্জে ৫৫২ জন, নরসিংদীতে ১৬৯ জন, রাজবাড়ীতে ১৫৭ জন, শরীয়তপুরে ৯৩ জন এবং টাঙ্গাইল জেলায় ৩৫৮ জনের মৃত্যু হয়। ময়মনসিংহ বিভাগে ৫২২ জনের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় ২২৪ জন, নেত্রকোনায় ৯৭ জন, জামালপুরে ১২৭ জন এবং শেরপুরে ৭৪ জন রয়েছেন। চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বমোট করোনায় মৃত তিন হাজার ৬৯৬ জনের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় এক হাজার ৫৩ জন, কক্সবাজারে ১৯৭ জন, বান্দরবানে ১৫ জন, রাঙ্গামাটিতে ২২ জন, খাগড়াছড়িতে ২০ জন, ফেনীতে ১৯৯ জন, নোয়াখালীতে ৪১৩ জন, লক্ষ্মীপুরে ১৪২ জন, চাঁদপুরে ৩৮০ জন, কুমিল্লা এক হাজার ৮ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িড়য়ায় ২৪৭ জন রয়েছেন। রাজশাহী বিভাগে সর্বমোট এক হাজার ৫৪৮ জনের মৃত্যু হয়। তন্মধ্যে রাজশাহীতে ২৭৮ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১৪৮ জন, নাটোরে ১৩৫ জন, নওগাঁয় ১৫৮ জন, পাবনায় ১৩০ জন, সিরাজগঞ্জে ১২৭ জন, বগুড়ায় ৪৮১ জন এবং জয়পুরহাটে ৯১ জন রয়েছেন। রংপুর বিভাগের সর্বমোট ৯৮৯ জনের মধ্যে রংপুর জেলায় ২১২ জন, পঞ্চগড়ে ৫৮ জন, নীলফামারীতে ৬৮ জন, লালমনিরহাটে ৬০ জন, কুড়িগ্রামে ৫৫ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১৭৪ জন, দিনাজপুরে ৩০৪ জন এবং গাইবান্ধায় ৫৮ জন রয়েছেন। খুলনা বিভাগের সর্বমোট দুই হাজার ৬৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে বাগেরহাটে ১৯১ জন, চুয়াডাঙ্গায় ২০৬ জন, যশোরে ৪০৫ জন, ঝিনাইদহে ২৫৮ জন, খুলনায় ৫২২ জন, কুষ্টিয়ায় ৬০১ জন, মাগুরায় ৯০ জন, মেহেরপুরে ১৫৮ জন, নড়াইলে ১২২ জন এবং সাতক্ষীরায় ৯২ জন রয়েছেন। বরিশাল বিভাগে সর্বমোট ৬২১ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে বরিশালে ২০৩ জন, পটুয়াখালীতে ১০৯ জন, ভোলায় ৫৮ জন, পিরোজপুরে ১০০ জন, বরগুনায় ৭৭ জন এবং ঝালকাঠিতে ৭৪ জন রয়েছেন। সিলেট বিভাগের সর্বমোট ৭২২ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে সিলেটে ৪৬৫ জন, সুনামগঞ্জে ৮৮ জন, হবিগঞ্জে ৬৮ জন এবং মৌলভীবাজারে ১০১ জন রয়েছেন।