স্টাফ রিপোর্টার: দেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন জন্ম নেয়া দলটির হাত ধরে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ সময় কেটেছে লড়াই-সংগ্রামে। হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র-সবই দেখেছে দলটি। সবকিছু মোকাবেলা করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলটি টানা ১৩ বছর ক্ষমতায়। তবে এ সুসময়ে সাংগঠনিকভাবে দলটির তৃণমূল বেশ অগোছালো। সরকারের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি আওয়ামী লীগকে আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এখন থেকেই সুসংগঠিতভাবে গড়ে তুলতে চান দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। একই সঙ্গে করোনাভাইরাস ও বন্যা মোকাবেলা এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সতর্ক তারা। আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। সূর্যোদয়ের ক্ষণে কেন্দ্রীয় ও দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৮টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে সীমিত পরিসরে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। সকাল সাড়ে ১০টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত থাকবেন। চুয়াডাঙ্গাতেও অধিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে আজ সকাল সাড়ে ৬টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, পৌনে ৭টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, সকাল ১০টায় বর্ণাঢ্য র্যালি, বাদ আসর দোয়া এবং বাদ মাগরিব কেককাটা ও আতশবাজি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
৭২ বছরের পথপরিক্রমায় দেশের বৃহত্তম ও প্রাচীন রাজনৈতিক দলটিকে অনেক চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়েছে। স্বাধীনতার পর’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর অনেকটা অস্তিত্ব সংকটেই পড়ে আওয়ামী লীগ। দলের ভেতরেও শুরু হয় ভাঙন। এর মধ্যে আবদুল মালেক উকিল-জোহরা তাজউদ্দীনের দৃঢ়তায় সংকট কাটিয়ে উঠতে শুরু করে দলটি। ১৯৮১ সালে দলের সভানেত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর দেশে ফিরতে সক্ষম হন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর এক দশক ধরে সারা দেশ ঘুরে দলকে সংগঠিত করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বেই ২১ বছর পর সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আবার সরকার গঠন করে দলটি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে পুনরায় বিজয়ী হয়। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
দলীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের টানা এক যুগের শাসনামলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন দেশ-বিদেশে আলোচিত হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে। ২৫ জুন উদ্বোধন করা হবে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। মহাকাশে নিজস্ব স্যাটেলাইট পাঠানো হয়েছে। কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনে সাফল্য এসেছে। জঙ্গি দমনে সাফল্য সারা বিশ্বে আলোচিত। করোনাকালে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হচ্ছে। দুঃসময়ে নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন, তরুণ ও মেধাবীদের সুপথের রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, জঙ্গি নির্মূল, স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচারকাজ সম্পন্ন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য মর্যাদা, দেশ ও জনগণের ভাগ্যের আমূল পরিবর্তন এবং বিশ্বদরবারে দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আওয়ামী লীগ।