দেশ-বিদেশ থেকে চুয়াডাঙ্গার খ্যাতনামা ক্রীড়াবিদদের প্রশংসা
স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘদিন পর চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী টাউন ক্লাব ফুটবল মাঠ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার চিরচেনা জায়গা যেখানে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, ভলিবল, অ্যাথেলেটিক্সসহ বিভিন্ন খেলার খেলোয়াড় তৈরীর সুতিকাগার। সেই ঐতিহ্যবাহী টাউন ক্লাব মাঠটি দীর্ঘদিন ধরেই ছিলো অবহেলিত। সংস্কারের অভাব ও সময় অসময়ে মাঠটি ব্যবহার হয়েছে খেলাধুলাবিহীন নানা কাজে। সরকারি-বেসরকারি সেই সকল কাজ শেষে মাঠটি হয়ে পড়ে খেলাধুলার অনুপযোগী। মাঠের চতুরদিক অরক্ষিত থাকায় হর-হামেশায় পথচারীসহ গবাদীপশু প্রবেশ করে মাঠটি পরিণত হয়েছিলো গো-চারণভূমিতে। খোলা জায়গায় রাতের আধারে বসতো নেশাখোরদের আড্ডা। মাঠের পাশে তৈরী ড্রেনটি সংস্কারের অভাবে ড্রেনের পানি মাঠে প্রবেশ করে এবং মাঠে জলাবদ্ধতার কারণে মাঠটি সবসময় খেলাধুলার অনুপোযোগী থাকতো। তাছাড়া ড্রেনের পাশে ট্রাক-বাসসহ নানাপ্রকার গণপরিবহনের অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে ড্রেনটি দুুমড়ে-মুচড়ে ভেঙেছে একাধিকবার। এভাবে মাঠটি বার বার হারিয়েছে তার আসল সৌন্দর্য। সেটি সংস্কার ও টাউন মাঠের আসল রুপ ফিরিয়ে আনার জন্য এই মাঠ থেকে যে সকল কৃতিমান খেলোয়াড় ও সংগঠক তৈরী হয়েছে তারা একাধিকবার আহ্বান জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিকট। কিন্তু সেটি হবে হবে করে চলে গেছে দীর্ঘ সময়।
জনশ্রুতি আছে ১৯৯২ সালের পরে তৎকালীন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন মাঠটি সংস্কার করেছিলেন। প্রায় ২৯ বছর পর আবারো মাঠটি সংস্কারের কাজ শুরু করেছেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। আর সামনে থেকে সেই সংস্কার কাজে সরাসরি নেতৃত্ব দিচ্ছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাবেক চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন। রোববার থেকে টাউন মাঠে শুরু হয়েছে বালি ভরাটের কাজ। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মুঠোফোনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি বলেন, মাঠ প্রথমে ফিলিং বালি দিয়ে ভরাট করে সমান করা হবে। এরপর উপরে কিছু ফ্রেস মাটি দেয়া হবে এবং খাওয়ানো হবে এ বর্ষার পানি। তারপর শুকনো মরসুমে মাঠটি রুলার করা হবে। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ড্রেনটি নতুনভাবে মেরামত করে দিলে মাঠটির চারিদিক নিরাপত্তা পাঁচিল ও ফেনসিং করা হবে। এরপর মাঠে খেলাধুলা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সময়োপযোগী ও ক্রীড়া বান্ধব ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিয়ে মাঠটি সংস্কার কাজ শুরু করায় এমপি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনকে দেশ-বিদেশে বসবাসকারী চুয়াডাঙ্গার কৃতি ফুটবলার, ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া সংগঠক এবং ক্রীড়ামোদী ব্যক্তিগণ ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। কানাডা প্রবাসি চুয়াডাঙ্গার কৃতি সন্তান বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক কৃতি ফুটবলার মামুন জোয়ার্দ্দার বলেছেন, আমার খুব ভাল লাগছে টাউন মাঠটি সংস্কার শুরু হওয়ায় কথা জেনে। এ মাঠেই আমার ফুটবলে হাতে খড়ি। আমার মতো মাহমুদুল হক লিটন ভাই, মধু ওস্তাদ, মানিক, মরহুম আশরাফ জোয়ার্দ্দার সাবু দা, আমার ভাই এ নাসির জোয়ার্দ্দার টেংরা, আব্দুল কাদের জোয়ার্দ্দার, মরহুম মতিয়ার ভাই, শহিদ হোসেন গুরখা, শহিদুল কদর জোয়ার্দ্দার, রেজাউল হক জোয়ার্দ্দার রেজা, নাজমুল হক শান্তিসহ চুয়াডাঙ্গার অনেক নামী খেলোয়াড় তৈরী হয়েছে এ মাঠের সবুজ ঘাসে অনুশীলন করে। এ মাঠে আবারো খেলাধুলা হবে জেনে খুব ভালো লাগছে। তবে এ মাঠ মেরামত হচ্ছে শুনে যেমন ভালো লাগছে তেমনই আরো ভাল লাগবে এ মাঠে পরবর্তীতে কোনো মেলা, যাত্রা, সার্কাস, বাণিজ্যমেলা যেনো না হয়। তিনি আরো বলেন, এ মাঠে খ্যাতিমান ক্রীড়া সংগঠক মরহুম হায়দার আলী জোয়ার্দ্দার, রফাতুল্লা পন্ডিত সাহেবের মতো মানুষ নিঃস্বার্থভাবে খেলাধুলা শিখিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গার ক্রীড়াঙ্গনের এই দুর্দিনে সেই সকল ক্রীড়া সংগঠক আবার যেনো তৈরী হয় সেই কামনা করি।
এছাড়া আমেরিকা থেকে ফ্লোরিডা বাংলা টিভির কর্ণধর হাকিমুল আলম মালিক টিটন বলেন, যোগ্য ক্রীড়া সংগঠকের যোগ্য কাজ। তবে সংস্কার কাজটি আরো আগে করা দরকার ছিলো। তাহলে চুয়াডাঙ্গার ক্রীড়াঙ্গনে ভালো খেলোয়াড় তৈরী চলমান থাকতো। মাঠ পরিচালনা কমিটির সম্পাদক সাবেক ফুটবলার মিঠু জোয়ার্দ্দার বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে মাঠটি সংস্কারের জন্য চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ও সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনের সঙ্গে কথা বলে আসছি। এখন মনে হচ্ছে সংস্কার কাজটি আমার জীবদ্দশায় হয়তো দেখে যেতে পারবো।