টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে স্পেনকে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে ইতালি। লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্রয়ের পর খেলা অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। কিন্তু বাড়তি ৩০ মিনিটেও কোন গোল না হওয়ায় ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণে যায় টাইব্রেকারে। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ৪-২ গোলের ব্যবধানে হেরে যায় স্পেন। আগামী রোববার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টায় ইউরো কাপের দ্বিতীয় শিরোপার লক্ষ্যে ফাইনাল খেলতে নামবে ইতালি। তাদের প্রতিপক্ষ হবে ইংল্যান্ড ও ডেনমার্কের মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনাল জয়ী দল। ম্যাচের শুরু থেকেই টিকিটাকা খেলতে দেখা যায় স্পেনকে। প্রথম ১৫ মিনিটে ৭৫ শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখেছে তারা। এতে সুযোগও পেয়েছিল, কিন্তু বল পেয়েও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি মিকেল ওইয়ারসাবাল।
২৪ মিনিটে ইতালির গোলমুখ বরাবর বুলেট গতির শট নেন স্পেনের ফরোয়ার্ড ড্যানিয়েল ওলমো। কিন্তু ইতালির গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুমাকে ভেদ করে তা জালে জড়াতে পারেনি। ম্যাচের ৩৩ মিনিটের মাথায় ইতালির পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন ওলমো। যদিও বল ক্রসবারের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়। ৩৯ মিনিটে আবার স্পেন কাউন্টার অ্যাটাকে মিকেল ওইয়ারসাবাল ইতালির বিপজ্জনক স্পটে পৌঁছে যান। কিন্তু বল গোল পোস্টের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে গোলের সুযোগ আসে আজ্জুরিদের। কিন্তু ভাগ্যগুনে বেঁচে যায় স্পেন। ৪৫ মিনিটে এমারসনের শট ক্রসবারে প্রতিহত হয়। ম্যাচের প্রথমার্ধে এটিই স্পেনের পোস্ট লক্ষ্য করে ইতালির একমাত্র যথাযথ শট। প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই একটি করে গোল করে। ম্যাচের ৬০মিনিটে স্পেনের রক্ষণকে ভেঙে ইতালিকে লিড এনে দেন চিয়েসা। যদিও ৮০ মিনিটে গোল করে সমতা ফেরান আলভারো মোরাতা, যিনি এদিন লুইস এনরিকের প্রথম একাদশে ছিলেন না। ফেরান তোরেসের পরিবর্তে হিসেবে তিনি নেমেছিলেন ৬২ মিনিটে। এ নিয়ে ইউরোয় স্পেনের হয়ে সবচেয়ে বেশি ৬টি গোল করার রেকর্ড গড়লেন মোরাতা। পেছনে ফেলে দিলেন ফার্নান্দো তোরেসকে। এরপর দুই দলই একাদশে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন এনেছিল। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। গোল করতে পারেননি কেউ। ফলে ৯০ মিনিটের খেলার বাঁশি শেষে অতিরিক্ত সময় যোগ হয়। ম্যাচের ৯৮ মিনিটে ওলমোর আক্রমণ প্রতিহত করেন ইতালির গোলরক্ষক দোন্নারুমা। শেষ হয় অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের খেলা। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আক্রমণের ধার বাড়ায় স্পেন। ১০৭ মিনিটে চিয়েসাকে তুলে বার্নারদেসচিকে মাঠে নামান এনরিকে। এর দুই মিনিট পরেই গার্সিয়াকে তুলে নিয়ে পাউ তোরেসকে মাঠে নামায় স্পেন। কিন্তু এতকিছুর পরেও ১২০ মিনিটে জয়-পরাজয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। খেলার ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারে মানুয়েল লোকাতেল্লির প্রথম শটই বাঁচিয়ে দেন স্পেনের গোলকিপার উনাই সিমোন। এরপর শট নিতে গিয়ে মাঠের বাইরে বল পাঠিয়ে দিলেন স্পেনের দানি ওলমো। ইতালির দ্বিতীয় শট নিতে যান বেলোত্তি, তিনি গোল করার পর স্পেনের মোরেনো ১-১ করেন। ইতালির তৃতীয় শটে গোল করেন লিওনার্দো বোনুচ্চি। ইতালি ২-১-এ এগিয়ে যাওয়ার পর থিয়াগোর গোলে ২-২ হয়। ইতালির চতুর্থ শট নেন ফেদেকিকো বের্নারদেস্কি, গোল করে তিনি ইতালিকে ৩-২-এ এগিয়ে দেন। এরপর আলভারো মোরাতার শট রুখে দেন দোন্নারুমা। ফলে জর্জিনহোর শেষ শট জালে জড়াতেই ইউরোর ফাইনালে চলে যায় ইতালি।