মাজেদুল হক মানিক : মধ্যরাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে গ্রামের পথে ছুটে চলা। কখনও কোডিভ রোগীদের বাড়িতে আবার কখনও হাসপাতালের বারাদ্দায় ব্যস্ততায় ছুটোছুটি একদল যুবকের। আবার কখনও রাতের নিরবতা ভেঙ্গে মরদহ দাফন-কাফনে ব্যস্ত ওরা। করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা সেবা ও করোনায় আক্রান্তদের মরদেহ দাফনে যারা ব্যয় করছেন চব্বিশ ঘন্টা সময়। ঈদের দিন ভোরে দুই জনের দাফন-কাফন করতে গিয়ে কখন ঈদের জামাত আর কখন কোরবানি তা ভুলেই গিয়েছিলেন যুবকরা। রোগীর সেবা আর মরদেহ দাফনে করোনা আক্রান্ত রোগীর পরিবারের পাশে দাঁড়ানো ঈদ-কোরবানি উপভোগের চেয়েও বড় মানবিক দায়িত্ব বলে মনে করছেন এসব যুবকরা। ছাত্রলীগের মেহেরপুর জেলা কোভিড ১৯ স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের একঝাঁক তরুণ-যুবক দিন রাত নিয়োজিত রয়েছেন এ কাজে। ঈদের আগের মধ্য রাতে গাংনী উপজেলার শানঘাট গ্রামের আব্দুল মালেক (৬৭) ও আজান গ্রামের আনারুল ইসলাম (৪৫) মরদেহ দাফন-কাফন করতে গিয়ে কিছুই খেয়ালই ছিল না বলে প্রতিক্রি
সদস্যরা জানান, মৃত্যুবরণকারীর ব্যক্তির ছেলে মেয়েরা শোকে পাগল। আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা কেউ এগিয়ে আসেনি। মরদেহের গোসলের জন্য ডেকেও কাউকে পাওয়া যায়নি। কবরে নামানোর জন্যও এগিয়ে আসেননি কেউ। তবে হাল ছাড়েননি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা নিজের পরিবারের কারও মরদেহ মনে করে সব কাজ সম্পন্ন করেন। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এই মানবিক দায়িত্ব পালন এলাকার বিভিন্ন মহলে প্রশংসার জোয়ারে ভাগসে। তারা আরও জানান, কোভিড রোগীর সেবা দিতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের থেকেও তারা দূরে থাকছেন। ফলে ঈদের দিন পরিবারের সদস্যদের সাথে থাকতে পারেননি তারা।
জানা গেছে, কোভিড আক্রান্ত কেউ মৃত্যু বরণ করলে ভয়ে আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী এবং কোন কোন ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যরাও এগিয়ে আসছেন না। এমন অমানবিক পরিস্থিতিতে ওই পরিবারের পাশে ছাত্রলীগের মানবিক নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে ১৫/১৬টি মরদেহ দাফন ও অর্ধ শতাধিক কোভিড রোগীর বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা দিয়েছেন ছাত্রলীগের স্বেছাসেবক ইউনিটের সদস্যরা। স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের সদস্যরা জানান, রাত গভীর হলেই করোনা আক্রান্ত রোগীর পরিবার থেকে ফোন আসে। কারও অক্সিজেন সংকট আবার কারও জরুরী ওষুধ। উপজেলা ও জেলা পর্যায় থেকে তা সংগ্রহ করে দূরের গ্রামেও তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ছাত্রলীগের এ কর্মকাণ্ড অত্যান্ত মানবিক দায়িত্ব উল্লেখ করে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তাদের প্রশংসা করছেন।