পাখির জন্য ভালোবাসা
সালাউদ্দীন কাজল: আগে গ্রামে গ্রামে হরহামেশাই দেখা মিলতো নানা প্রজাতির পাখি। কিন্তু এখন তো তাদের আর চোখেই পড়ে না। গাছে গাছে পাখির কলরবও যেন উধাও। তাহলে কি ‘পাখি-সব করে রব, রাতি পোহাইল’ ছড়ার মতো পাখির শব্দে আর ঘুম ভাঙবে না? এমন শঙ্কা জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামের রাবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক নাজমুল হক লাজুকে পেয়ে বসে। তিনি ভাবতে থাকেন পাখিদের জন্য কী করা যায়। সে ভাবনা থেকেই শুরু পাখির জন্য বাসা বানানো। তার সঙ্গে যোগ দেন আরও কয়েকজন তরুণ। নিজেদের গাঁটের পয়সা খরচ করে গাছে গাছে বেঁধে দেবেন পাখির জন্য বাসা। তাদের ভালোবাসায় তৈরি হবে উথলী গ্রামে পাখির জন্য সহস্রাধিক নিরাপদ আবাস।
জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামের এই তরুণদের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। রাবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক নাজমুল হক লাজু বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বিলুপ্তপ্রায় পাখিদের ফিরিয়ে আনা। এ জন্য দরকার নিরাপদ বাসা আর মানুষকে সচেতন করা। আমরা সে কাজটিই শুরু করছি।’ তিনি জানালেন, উথলী গ্রামে সহস্রাধিক মাটির কলসি বেঁধে দেবেন গাছে। শুধু তা-ই নয়, পাখির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে মানুষকে সচেতন করার কাজও করবেন। তাদের মূলমন্ত্র, ‘পাখি প্রকৃতির অলংকার, পাখি ছাড়া প্রকৃতি অসুন্দর’।
জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামকে পাখির অভায়ারণ্য করতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে গাছে গাছে পাখির বাসা বেঁধে দেয়ার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়েছে।
জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি মো. হাফিজুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এর আগে রাবা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে উথলী বাসস্ট্যান্ড মোড় কমিটির সাধারণত সম্পাদক মোবারক সোহেল আহম্মেদ প্রদীপের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য দেন, জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি মো. হাফিজুর রহমান, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি, উথলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, জীবননগর উপজেলা লোকমোর্চার সহ-সভাপতি সাংবাদিক সালাউদ্দীন কাজল, হিজলগাড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ হাসান, চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক ভাষাপরিষদের প্রতিষ্ঠাতা শামিম হোসেন মিজি, ভিএসও-প্রথম আলো স্বেচ্ছাসেবী পদক প্রাপ্ত প্রকৃতি সংরক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবক বখতিয়ার হামিদ প্রমুখ।
উথলী গ্রামকে পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে তুলতে পাখি শিকার, হত্যা, আটক ও ক্রয়-বিক্রিসহ পাখি নিধনের জন্য কৃষি জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা।