স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় ব্র্যাকের প্যানেল আইনজীবীদের সাথে যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বিয়য়ে অ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১০টায় ব্র্যাক আঞ্চলিক কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চুয়াডাঙ্গা ব্র্যাকের প্যানেল আইনজীবীরা অংশগ্রহণ করেন।
বেসরকারি সংগঠন ব্র্যাকের চুয়াডাঙ্গা জেলা সমন্বয়ক মানিক ম্যাক্সিমিলিয়ন রুপা’র সভাপতিত্বে অ্যাডভোকেসি সভায় ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আওলিয়ার রহমান প্রধান অতিথি এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (এমওসিএস) ডা. সাজিদ হাসান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সভায় ব্র্যাকের টিবি কন্ট্রোল প্রোগ্রামের জেলা ম্যানেজার আব্দুর রউফ, আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (প্রগতি) শেখ মো. আব্দুর রশীদ, আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (সিড মার্কেটিং) কামরুল হাসান, লিগ্যাল এন্ড কম্লায়েন্স ল’ইয়ার বিল্লাল হোসেন, মানব সম্পদ বিভাগের ডেপুটি ম্যানেজার মো. রোকনুজ্জামান, পিও পিপিএম সুব্রত কুমার মল্লিক, ফ্যাসিলেটর শরমা রঞ্চন ইন্দ্রানী (ট্রেইনার) এবং ফ্যাসিলেটর সাবিনা ইয়াসমিন (ট্রেইনার) এবং ১৭ জন প্যানেল আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, যক্ষার জীবাণু দ্বারা মানুষ আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যক্ষা মারাত্মক সংক্রামক ব্যধি। বিশেষত মানুষের ফুসফুসে আক্রান্ত হতে পারে। শরীরের অন্য অংশেও আক্রান্ত হতে পারে। ২ সপ্তাহের বেশি কাশি হলে নিকটস্থ কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চুয়াডাঙ্গা বক্ষব্যধি হাসপাতাল, তিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ব্র্যাকের খাড়াগোদা, জেহালা, দর্শনা ও আন্দুলবাড়িয়া এবং হাসপাতাল রোডে ব্র্যাকের একটি কেন্দ্রে এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে কফ পরীক্ষা করা হয়। প্রতিটি উপজেলা হাসাপাতাল ও বক্ষব্যাধি হাসপাতালে জিন এক্সপার্ট ডটস কর্ণার করা আছে। ৬-৯ মাস ওষুধ খেলেই রোগী সম্পূর্ণ ভালো হয়। বিশ্বে ৩০টি দেশ যক্ষার শীর্ষে রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে। প্রতি লাখে ২২১ জন রোগী শনাক্ত হয় এবং ২৪ জন রোগী মারা যায়। বাংলাদেশে প্রতি বছরে ৪০ হাজার রোগী যক্ষায় মারা যায়। ২০২৫-২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতিবছর শতকরা ১০ ভাগ করে যক্ষা রোগী কমিয়ে আনতে হবে। দেশে ২৫টি এনজিও সরকারের সাথে কাজ করছে যক্ষামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে। যক্ষা রোগে কেউ মারা যাবে না। চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে সপ্তাহে ৩ দিন যক্ষা পরীক্ষা করা হয় এবং ২০২২ সালে ৪জন রোগী পাওয়া গেছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আওলিয়ার রহমান বলেন, যক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি। হার্টেও যক্ষা হয়। সাধারণ যক্ষা ফুসফুসে হয় ও হাঁড়েও হয়। মাথায়ও যক্ষা হয়। ৩ সপ্তাহের বেশি কাশি হলে যক্ষা হয়েছে বলতো। এখন ২ সপ্তাহ জ্বর হয়। শরীরের ওজন কমে যাচ্ছে, কাশির সাথে রক্ত থাকে। সিজারের চামড়াও যক্ষা হয়। জন্মের ৪২ দিনের মধ্যে বিসিজি টিকা নেয়া হয়। ১০০ জনের মধ্যে ৯৪ জন রোগী চিকিৎসায় ভালো হয়। খুব ভালো অবস্থানে আছি। ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হয় তাদের যক্ষা হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে আক্রান্ত হতে পারে। এইচআইভি-যক্ষা পারস্পারিক সম্পর্ক আছে। খুলনা বিভাগে ২৪ জন রোগী আছে। চুয়াডাঙ্গায় নেই। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সুষম খাবার খেতে হবে। করোনায় যে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম তা ভালো। সরকার বিনা পয়সায় চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা দিচ্ছে। তাহলে কেন আমরা রোগ চেপে রাখবো। এর ফলে রোগ বালাই ছড়াচ্ছে না। দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৫০ জন মারা গেছেন এবং যক্ষায় প্রতি বছর দেশে ৪৪ হাজার রোগী মারা যায়। একজন যক্ষা রোগীর জন্য সরকার ৩৫ লাখ টাকা খরচ করে। ২০৩৫ সালের মধ্যে যক্ষা শূণ্যের কোটায় নিয়ে যেতে হবে। যে যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সরকারের সাথে ব্র্যাক সাহায্য করছে। জীন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে টেস্ট, এক্সরে, কফ ও রক্ত পরীক্ষা বিনামূল্যে করে দিচ্ছে। চিকিৎসার আওতায় এলে রোগী সুস্থ থাকতে পারে।