কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: নানা নাটকীয়তা শেষে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক লিটন বিশ্বাসের (৩২) মরদেহ ১৫ দিন পর ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। শনিবার বিকেল ৫টার দিকে দৌলতপুর সীমান্তের ওপার ভারতের কুমড়িপাড়া সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ’র মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে লিটন বিশ্বাসের মরদেহ ফেরত দেয়া হয় বিজিবি স‚ত্রে নিশ্চিত করেছেন। এসময় নিহতের পরিবারের পক্ষে ছোট ভাই শিপন বিশ্বাস মরদেহটি গ্রহণ করেন।
বিজিবি ও স্থানীয় স‚ত্র জানায়, মরদেহ ফেরত নিয়ে বিএসএফ’র হ্যা বা না জাতীয় নানা নাটকীয়তায় কেটেগেছে দুই সপ্তাহ। অবশেষে শনিবার বিকেল ৫টায় লিটন বিশ্বাসের মরদেহ ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। মরদেহ ফেরত নিয়ে ১৫১/১৪ (এস) সীমান্ত পিলার সংলগ্ন দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুন্ডি মাঠপাড়া সীমান্তের ওপার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হোগলবাড়িয়া থানার কুমড়িপাড়া সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ’র মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠককে বিজিবি’র পক্ষে নেতৃত্ব দেন ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনস্থ প্রাগপুর কোম্পানী কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) নায়েক সুবেদার আমজাদ হোসেন।
এসময় দৌলতপুর থানা পুলিশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন তেকালা ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই জিয়াউর রহমান। বিএসএফর পক্ষে নেতৃত্ব দেন ১৪১ বিএসএফ কমান্ডেন্ট অধিনস্থ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হোগলবাড়িয়া থানার অর্ন্তগত চরমেঘনা ক্যাম্পের ইনচার্জ এসি রাজেশ টিকে লাকরা। এসময় ভারতের করিমপুর থানার সিআই মো. ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনস্থ প্রাগপুর কোম্পানী কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) নায়েক সুবেদার আমজাদ হোসেন জানান, শনিবার বিকেলে পতাকা বৈঠক শেষে বিএসএফ’র পক্ষ থেকে লিটন বিশ্বাসের লাশ বিজিবি’র নিকট হস্তান্তর করেছে। বিজিবি লাশ গ্রহণ শেষে নিহত লিটন বিশ্বাসের ছোট ভাই শিপন বিশ্বাসের নিকট তা বুঝিয়ে দেন।
উল্লেখ্য, ৫ মার্চ রাতে দৌলতপুর সীমান্তের ওপার ভারত ভ‚-খন্ডে বিএসএফ’র গুলিতে লিটন বিশ্বাস (৩২) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়। নিহত লিটন দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন বিলগাথুয়া গ্রামের আকবর আলী বিশ্বাসের ছেলে। ওইদিন রাতে লিটন বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল লোক ভারত ভুখন্ড থেকে বাংলাদেশে প্রবেশকালে বিএসএফের গুলিবিদ্ধ হয়।
অভিযোগ আছে যে তারা ম‚লত: ভারত থেকে বাংলাদেশে মাদক পাচার করছিলো। এসময় ১৫১-৬ (এস) সীমান্ত পিলার সংলগ্ন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হোগলবাড়িয়া থানার মেঘনা সীমান্তে ১৪১ বিএসএফ কমান্ডেন্ট অধিনস্থ মেঘনা ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে লিটন বিশ্বাস নিহত। বাকীরা বাংলাদেশ সীমানায় পালিয়ে আসে। পরে বিএসএফ নিহত লিটন বিশ্বাসের মরদেহ উদ্ধার করে হোগলবাড়িয়া থানায় সোপর্দ করে। হোগলবাড়িয়া থানা পুলিশ নিহত যুবকের মরদেহের ময়না তদন্তের জন্য কৃষ্ণনগর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। অবশেষে হত্যাকান্ডের ১৫দিন পর লাশ ফেরত দেয় বিএসএফ।