দর্শনা অফিস: অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ক্ষমতাসীনরা ফের বসলেন ক্ষমতার চেয়ারে। বিপুল ভোটের ব্যবধানে আবারো সবুজ সভাপতি ও মাসুদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। এ নির্বাচনে ২১ পদের বিপরীতে ৪৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৪টি পদে ৪জন প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় কেরুজ প্রাইমারি স্কুলভবনে। ১০টি বুথে ১১৮৯ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। স্মরণকালের রেকর্ড ভেঙে এবারের নির্বাচনে বেলা ১১টার দিকেই অর্ধেকের বেশী ভোট পোল হয়েছে। যদিও বিকেল ৩ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণের নির্ধারিত সময় ছিলো। অবেশেষে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন চলাকালীন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনিসুজ্জামান, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা ও কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন। ১২০ জন পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার নেতৃত্বে ছিলেন দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ এএইচএম লুৎফুল কবীর। এছাড়া গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকটি দল দফায় দফায় টহল দেয়। এবার ১১৮৯ ভোটের মধ্যে পোল হয়েছে ১১৮৬। ফলে এবার মাত্র ৩ ভোট পোল হয়নি। এ নির্বাচনে সভাপতি পদে ফিরোজ আহমেদ সবুজ (ছাতা) প্রতীকে ৭৬৫ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি সাবেক সভাপতি তৈয়ব আলী (বাইসাইকেল) প্রতীকে পেয়েছেন ৪০৫ ভোট। সভাপতি পদে ৭ ভোট বাতিল হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক পদে মাসুদুর রহমান মাসুদ (চাঁদতারা) প্রতীকে ৭০২ ভোট পেয়ে ৯ম বার নির্বাচিত হলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম প্রিন্স (আনারস) প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬০ ও জয়নাল আবেদীন নফর (হারিকেন) প্রতীকে ১০২ ভোট পেয়েছেন। এ পদে বাতিল হয়েছে ১২ ভোট। সহসভাপতি পদে নির্বাচিত হবেন দুজন। মফিজুল ইসলাম (তালাচাবি) প্রতীকে ৬২৩ ও রেজাউল করিম (টেবিল) প্রতীকে ৪৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি এএসএম কবীর (কলস) ৪৭১, আনিসুর রহমান (গরুরগাড়ী) প্রতীকে ১৮১ ভোট পেয়েছেন। যুগ্ম-সম্পাদক পদে দুজন নির্বাচিত হবেন। হাফিজুর রহমান (হাঁস) প্রতীকে ৫৯৮ ও মোস্তাফিজুর রহমান (চেয়ার) প্রতীকে ৫৭২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বর্তমান যুগ্ম-সম্পাদক খবির উদ্দিন (আম) ৩৮৩, আতিয়ার রহমান (মাছ) ১৬৯ ও মহিদুল ইসলাম (হাতপাখা) প্রতীকে পেয়েছেন ৮২ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ইকবাল হোসেন (কাপপিরিচ) প্রতীকে ৫৮৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি বাবুল আক্তার (প্রজাপতি) প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৫৩৫। দফতর সম্পাদক পদে সালাউদ্দিন সনেট (উড়োজাহাজ) প্রতীকে ৭২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি আবুল হোসেন (হরিণ) প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯৫ ভোট। প্রচার সম্পাদক পদে আব্দুল কুদ্দুস (মোবাইল ফোন) প্রতীকে ৫৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি মিজানুর রহমান (মোরগ) ৩৪২ ও সাংবাদিক ইয়াসির আরাফাত মিলন (কুড়েঘর) প্রতীকে পেয়েছেন ১৫৩ ভোট। কোষাধ্যক্ষ পদে আবু সাঈদ (কাঁঠাল) প্রতীকে ৬৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি কায়েশ আব্দুল্লাহ (রিকশা) প্রতীকে ৪২৫ ভোট পেয়েছেন। এছাড়া ৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১ ও ৬নং ওয়ার্ডে ৪জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। যারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন তারা হলেন ১নং ওয়ার্ডের সেলিম খান এবং ৬নং ওয়ার্ডের মাজেদুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম ও মজিবর রহমান। ২নং ওয়ার্ডে আমিরুল ইসলাম (ডাব) প্রতীকে ১০৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আব্বাস আলী (বালতি) ৯০ ও বাবর আলী (বেলচা) প্রতীকে পেয়েছেন ৪১ ভোট। ৩নং ওয়ার্ডে শরিফুল ইসলাম (টর্চলাইট) প্রতীকে ১৩১ ও বাবুল আক্তার (গোলটুপি) প্রতীকে ৯০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি শফিকুল ইসলাম (আখের আটি) ২৪, জাহিদুল ইসলাম (ডাব) ২০ ও মোজাহারুল ইসলাম (হাতুড়ি) প্রতীকে পেয়েছেন ১২ ভোট। ৪নং ওয়ার্ডে মতিয়ার রহমান (ডাব) প্রতীকে ৯৭ ও কামরুল হাসান লোমান (আখের আটি) প্রতীকে ৯১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের একমাত্র নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি মাহমুনুল হাসান (টর্চলাইট) প্রতীকে পেয়েছেন ৮৪ ভোট। ৫নং ওয়ার্ডে সাহেব আলী শিকদার (টর্চলাইট) ৮৯ ও হারিজুল ইসলাম (আখের আটি) প্রতীকে ৭০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি সাইফ উদ্দিন সুমন (ডাব) পেয়েছেন ৫৭ ভোট এবং ৭নং ওয়ার্ডে আজাদ আলী (হাতুড়ি) প্রতীকে ১৩০, ইদ্রিস আলী (ডাব) প্রতীকে ১০৪ ও জহিরুল ইসলাম (বালতি) প্রতীকে ১০২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাহিদুল ইসলাম (গাভী) ৬৩, তারাপদ বিশ্বাস (আখেরআটি) ৫৮, রবিউল ইসলাম (বেলচা) ৩৫ ভোট পেয়েছেন। নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন চেয়ারম্যান কেরুজ চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব পরিবহন বিভাগের (প্রকৌশলী) আবু সাইদ, সদস্য প্রশাসন বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপক (পার্সনাল) আলআমিন, উপ-ব্যবস্থাপক (হিসাব) জাবেদ হাসান, জুনিয়ার অফিসার (বাণিজ্যিক) জহির উদ্দিন।।