জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার উথলী বাজারে অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত উথলী সোনালী ব্যাংক শাখায় ডাকাতির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের দু’সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল গতকাল মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের রাজশাহী অঞ্চলের প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উথলী সোনালী ব্যাংক শাখায় এসে ডাকাতির ঘটনায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপকসহ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছে বিস্তারিত শোনেন। ব্যাংক পরিদর্শন শেষে বিকেল ৫টার সময় তারা রাজশাহীতে ফিরে যান। এছাড়া সোনালী ব্যাংকের ফরিদপুর জিএম অফিসের জেনারেল ম্যানেজার (ইনচার্জ) খোকন চন্দ্র বিশ্বাস, অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার মো. আমির খসরু, প্রিন্সিপাল অফিসার খায়রুল ইসলাম, সোনালী ব্যাংক চুয়াডাঙ্গার প্রিন্সিপাল অফিসের ব্যবস্থাপক খন্দকার আবুল কালাম আজাদ গতকাল মঙ্গলবারও উথলী সোনালী ব্যাংক পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে জীবননগর থানা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ডাকাতদলের সদস্যদেরকে গ্রেফতার এবং ব্যাংক থেকে লুট হওয়া টাকা উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবারও সকাল থেকে শাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে ডাকাতি ঘটনার তথ্য উদঘাটনে এলাকায় ঘুরতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যে তারা ডাকাতি ঘটনার কিছু ক্লু উদঘাটন করতে পেরেছেন। ওই ক্লু মোতাবেক তারা বেশ কিছু দূর এগিয়েছেন এবং সন্দেহভাজন কয়েকজনকে কড়া নজরদারিতে রেখেছেন।
এর আগে জীবননগর থানা পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ জনকে থানায় নিয়েছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে রোববার বিকেলে উথলী সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক উথলী গ্রামের এনামুল হক এবং আনিসুর রহমানকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয়া হয়। অপরদিকে সোমবার ভোরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আকুন্দবাড়িয়া গ্রামের রহমান হোসেনের ছেলে জনি (২৫), দেলবার হোসেনের ছেলে কালু (২৮) এবং হাসমত আলীর ছেলে হৃদয়কে (২৮) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জীবননগর থানায় নেয়া হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকেলে ছেড়ে দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত. জীবননগর উপজেলার উথলী বাজারে অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত উথলী সোনালী ব্যাংক শাখায় গত রোববার বেলা সোয়া ১টার সময় ফিল্মি স্টাইলে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাত দল এ সময় অস্ত্রের মুখে ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরীসহ সবাইকে জিম্মি করে নগদ ৮ লাখ ৮২ হাজার ৯শ’ টাকা লুট করে নির্বিঘেœ পালিয়ে যায়। ডাকাতির ঘটনার পর খবর পেয়ে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) কেএম নাহিদুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম, জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি মো. হাফিজুর রহমান, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুনিম লিংকন, চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) আবু রাসেল, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) উপ-পরিচালক জিএম জামিল সিদ্দিক, সোনালী ব্যাংকের ফরিদপুর জিএম অফিসের জেনারেল ম্যানেজার (ইনচার্জ) খোকন চন্দ্র বিশ্বাস, সোনালী ব্যাংকের চুয়াডাঙ্গার প্রিন্সিপাল অফিসের ব্যবস্থাপক খন্দকার আবুল কালাম আজাদ, সহকারী ব্যবস্থাপক আনিসুর রহমান, জীবননগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলামসহ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), ডিজিএফআই, ডিএসবি ও সিআইডির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ডাকাতির ঘটনায় রোববার রাত ১০টার সময় উথলী সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আবু বক্কর সিদ্দিক বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৩ জনের নামে জীবননগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।