স্টাফ রিপোর্টার: দরিদ্র আজাদ হোসেন (৩৮) গুরতর অসুস্থ হলে ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি। পরে অর্থাভাবে লাশ বাড়ি নিতে পারছিল না পরিবার। মৃতের বাড়িতে প্রতিবেশীদের মধ্যে এ নিয়ে আলাপ চলছিলো। এ সময় বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর পুলিশ ক্যাম্পের উপ পরিদর্শক (এসআই) সাগর শিকদার। জটলা দেখে তিনি সেখানে যান। পরে ঘটনার বিবরণ শুনে তাৎক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার টাকা পরিবারটির হাতে তুলে দেন তিনি। রোববার দুপুর ৩টায় ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কুশাডাঙ্গা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। মানবিক ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম সাগর শিকদার। তিনি মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বে আছেন।
পারিবারিক সূূত্র জানায়, আজাদ হোসেন ঢাকায় গত রোববার সকাল ৬টায় মারা যান। তার বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কুশাডাঙ্গা গ্রামে। অর্থাভাবে আজাদের মরদেহ ঢাকা থেকে বাড়ি নিতে পারছিলো না তার পরিবার। ঘটনা শুনে মহেশপুরের দত্তনগর পুলিশ ক্যাম্পের উপ পরিদর্শক (এসআই) সাগর শিকদার তাৎক্ষণিক গাড়ি ভাড়ার টাকা আজাদের স্বজনদের হাতে তুলে দেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য মো. মোকছেদ আলী বলেন, আজাদের ফুসফুসে সমস্যা ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকাতে তিনি মারা যান। মরদেহ বাড়িতে আনার জন্য ১২ হাজার টাকা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেন। পরিবারের কাছে তা ছিল না। ফলে গ্রামের মানুষের কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা উঠোনো হয়। সাগর শিকদার বিষয়টি জানতে পেরে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার পুরো টাকা দেয়ার দাবি করেন। তবে ভিন্ন ধর্মের হওয়ায় প্রথমে তার টাকা নিতে চাইনি। পরে সবার অনুরোধে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার পুরো টাকাই তিনি দেন। অ্যাম্বুলেন্স চালকও ১ হাজার টাকা দেন তাদেরকে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আজাদের পরিবারে আছেন স্ত্রী সোনিয়া আক্তার, ছেলে সোয়াইব হোসেন (৮) ও মেয়ে আরিয়া (৪)। পরিবারের পক্ষ থেকে অসুস্থ আজাদকে তাৎক্ষণিক ঢাকায় পাঠানো হলেও কোনো টাকার ব্যবস্থা ছিল না। তার মৃত্যুতে পরিবারটির আরও খারাপ অবস্থা হলো।
মহেশপুর দত্তনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক সাগর শিকদার বলেন, সামান্য টাকার জন্য স্বজনের মরদেহ বাড়ি আনতে হিমশিম খাচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি জেনে আমার খুব খারাপ লাগে। সেই জন্য আমি তাদের সহযোগিতা করেছি।