লালন গবেষক নিয়ামত আলী মাস্টারের পরলোক গমন : এক রূপালী নক্ষত্রের অন্তর্ধান

রহমান মুকুল: নিভৃতচারী ও একনিষ্ঠ লালন গবেষক ছিলেন আলমডাঙ্গার নিয়ামত আলী মাস্টার। গত সোমবার ভোর ৩টায় রাজশাহীর পপুলার হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি…..রাজিউন)। সম্প্রতি তিনি নির্মাণাধীন বিল্ডিং থেকে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৫ বছর। গতকাল দুপুর পর জানাজা শেষে জান্নাতুল নাঈম কবরস্থানে মরহুমের লাশ দাফন করা হয়েছে।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুইপুত্র ও দুই কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুমের জানাজায় আত্মীয় পরিজন, সাবেক শিক্ষার্থীসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের নিকট দোয়া চাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত. নিয়ামত আলী মাস্টার নিবেদিতপ্রাণ লালন গবেষক ছিলেন। তিনি লালনের সমস্ত গান সংগ্রহ করে তার প্রচলিত অর্থ, আক্ষরিক অর্থ ও অন্তর্নিহিত গুঢ় অর্থ লিখেছেন। লালনের গানগুলো তিনি আশিটি পর্বে বিভক্ত করে বিশ্লেষণ করেছেন। তিন‘শ ছেষট্টি জন বাউল গীতিকারের গুরুর নামসহ তাদের কয়েক হাজার লোকসঙ্গীত সংগ্রহ করেছেন। সেগুলোর রচয়িতা কে কে তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ দিয়েছেন। দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে তিনি এগুলো সংগ্রহ করেছেন গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে ঘুরে। তিনি লালন বাদেও ১১শ বাউল গানের ব্যাখা বিশ্লেষণ করেছেন। এ সংক্রান্ত বহু প্রবন্ধ লিখেছেন।
তিনি ১৯৪৮ সালে ২৭ জুলাই আলমডাঙ্গা গোবিন্দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ইসমাইল ম-ল। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে তিনি শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নেন। ২০০৫ সালে তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। বাংলা একাডেমির সহকারী পরিচালক সাইমুন জাকারিয়ার সাথে তার ছিলো বিশেষ হৃদ্যতা। মাঝে মধ্যেই সাইমুন জাকারিয়া ছুটে আসতেন তার নিকট।

 

Comments (0)
Add Comment