রাতের আঁধারে ৪টি স্কেভেটর ভাঙচুর : দু’পক্ষের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার গড়াইটুপি গহেরপুর পাকশির বিল পুনঃখননের নামে মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে গহেরপুর মৎস সমবায় সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে। বিলের ধারে বাঁধ দিলে আশপাশের আবাদি জমির চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কায় এলাকাবাসী বিভিন্ন দফতরে অভিযোগও করেছে। অপরদিকে রাতের আঁধারে এস্কেভেটর ভাঙচুর নিয়ে সমিতির লোকজন ও স্থানীয় সাবেক এক ইউপি সদস্যর সমর্থকের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিল খনন এবং মাটি বিক্রির বিরুদ্ধে কেউ অবস্থান নিলে সমিতির পক্ষ থেকে তাদেরকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের গহেরপুর ও বাটিকাডাঙ্গা মৌজায় প্রায় ৮৫ একরের একটি সরকারি (পাকশি বিল) জলমহল অবস্থিত। জলমহলটি মৎস অধিদফতরের মাধ্যমে জলাশয় সংস্কার মৎস উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের মাধ্যমে (২য় সংশোধন) পুনঃখননের কাজ শুরু করেছে অধিদফতর। এর জন্য ৫টি স্কিমে প্রায় ১ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। কাজটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় গহেরপুর মৎসজীবি সমিতি। ২৮ ফেব্রয়ারি ৬০ লাখ টাকার তিনটি স্কিমের কাজ শুরুও করেছে সমিতির লোকজন। অভিযোগে ওঠে কাজের শুরুতেই বিলের পাড় বাঁধার অজুহাতে মাটি কেটে বিক্রির উৎসবে মাতে সমিতির সভাপতি বিমল মাঝি ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক। শুধু তাই নয় মাটিবোঝাই ট্রাক্টরগুলো গ্রামের পাকাসড়কগুলোতে বেপোরয়া গতিতে চলাচল ও গ্রামীণ পাকা সড়ক নষ্ট হতে থাকে। বিলের পাড় বাঁধের ফলে আশপাশ এলাকার ফসলী জমিতে জলাবদ্ধা সৃষ্টি এবং বেপরোয়া গতির ট্রাক্টর চলাচলে পাকা সড়ক নষ্ট হবার প্রতিবাদে জলমহল খননের কাজ বন্ধের দাবিতে গহেরপুুর গ্রামের আবুল হোসেন ম-লের ছেলে জাহিদুল ইসলামসহ গহেরপুর, তেঘরি ও বাটিকাডাঙ্গা গ্রামের লোকজন গণস্বাক্ষর করে বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অজ্ঞাত কারণে সব দফতরই নীরব থাকে। বিলের খনন কাজ শুরুর দিন থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ করে আসছে। এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে কে বা কারা মাটি খননের ৪টি স্কেভেটর ভাঙচুর করায় উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। সচেতন মহল মনে করছেন, নদী-নালা, খাল-বিল খনন মানে সরকারি টাকার তছরূপ। এতে কয়েকটি দফতর এবং কতিপয় ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষা ছাড়া আর কিছুই না। মানুষের কল্যাণের চাইতে অকল্যানই বেশি হয়ে থাকে। যেখানে সরকার ফসলি জমি নষ্টের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সেখানে অহেতুক বাঁধ দিয়ে ফসলি জমির চাষাবাদ হুমকির মুখে ফেলার যৌক্তিকতা কতটুকু তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে? গহেরপুর মৎসজীবি সমিতির সভাপতি বিমল মাঝি বলেন, ১৭০ গাড়ি মাটি সরকারি কাজে ব্যবহার করার জন্য উপজেলায় দেয়া হয়েছে; বিক্রি নয়। সাধারণ সম্পাদক আশাদুল হক বলেন, গহেরপুর গ্রামের লোকজন হয়তো ভেকু ভাঙচুর করেছে। এ বিষয়ে আমার নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। আমার বিলে পাড় বাঁধার প্রয়োজন সেটা আমি যেকোন ভাবেই করবো। চুয়াডাঙ্গা জেলা মৎস কর্মকর্তা দীপক কুমার পাল বলেন, অভিযোগ যে কেউ করতেই পারে। আমরা কোনো প্রকল্প দেইনি এটা ভরাট বিলের পুনঃখনন কাজ। ১ কোটি টাকার ৫টি স্কিম পাঠিয়েছি। তার মধ্যে ৩টি স্কিমের অনুকূলে ১৫ লাখ টাকা ছাড় করেছে। যার কাজ চলছে। বাকি টাকা আসবে পর্যায়ক্রমে।

Comments (0)
Add Comment