স্টাফ রিপোর্টার: প্রেম করে বিয়ে। আড়াই মাস পার না হয়েই যৌতুক বাবদ মোটরসাইকেল, সোনার আংটি ও একটি মোবাইলফোন দাবি করে জামায় শাওনসহ তার পরিবারের সদস্যরা। অসহায় পিতার পক্ষে এখন এতো টাকার জিনিস দেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয়। এ নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরাও অসহায় পিতার কথার সমর্থক জানিয়ে মীমাংসা করে। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে কনের বাবাসহ চারজনকে বেধড়ক পিটিয়েছে ছেলের বাবাসহ তিন ভাই। গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের সড়াবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহতদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন, সরাবাড়িয়া গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার মৃত আবু বকর মল্লিকের ছেলে আবু তাহের মল্লিক (৫৫), তার দুই ছেলে (মেয়ের বোনায়) শরিফুল ইসলাম (২৫), বাবু (১৬), ও কনের পিতা জীবননগর উপজেলায় উথলী ইউনিয়নের সেনেরহুদা গ্রামের মাঝেরপাড়ার উম্মাদ আলীর ছেলে মধু মিয়া (৪৫)।
আহত কনের পিতা মধু মিয়া বলেন, বছর খানেক ধরে আমার মেয়ে কনার (১৬) সাথে সরাবাড়িয়া গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার আজিজুল মল্লিকের ছেলে শাওনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আড়াই মাস পূর্বে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই জামায় শাওনসহ তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুক বাবদ একটি মোটরসাইকেল, সোনার আংটি ও স্মার্ট মোবাইলফোন দাবি করে আসছে। আমি দরিদ্র হওয়ায় তাদের দাবি মেনে নিতে পারিনি। এই নিয়ে মাঝেমধ্যেই আমার মেয়েকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলে। গতকাল সোমবার আমার বিয়ান ময়না খাতুন আমাকে ফোন দিয়ে যৌতুকের কথা বলে। বিকেলে তারা আমার বাড়িতে আসে। সন্ধ্যার পর গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের সম্মতিতে যৌতুক না নেয়ার জন্য মত দেয়া হয়। মীমাংসার পর শাওনের মা ময়না খাতুন গালিগালাজ শুরু করে। এতে উভয়পক্ষ বাগবিত-ায় জড়িয়ে পড়ে। এ সময় শাওনের পিতা আজিজুল ও তার তিনভাই বাঁশ দিয়ে তাদেরকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর বলেন, সড়াবাড়িয়া গ্রামে যৌতুকের চাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাকিল আরসালান বলেন, আবু তাহেদের মাথায় বেশ কয়েকটা সেলাই দেয়া হয়েছে। তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত কিনা এখনি বলা যাবে না। ভর্তি রেখে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে পাঠানো হতে পারে। তবে বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।