স্টাফ রিপোর্টার: দেশের আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্টের প্রধান কার্যালয় চুয়াডাঙ্গার মোমিনপুরে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জুবায়েরসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রাহকের ১৮ লাখেরও বেশি টাকা আত্মসাতের মামলায় গ্রেফতার হওয়া প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের সিদ্দিকী মানিকসহ চারজনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঝিনাইদহ র্যাব-৬ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ঝিনাইদহ র্যাব-৬ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর শরীফুল আহসান জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের মৃত ওহিদুল ইসলামের ছেলে আতিকুর রহমান উজ্জলের কাছ থেকে ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৪৮০ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় আদিয়ান মার্ট। এই অভিযোগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জুবায়ের সিদ্দিকী মানিক, তার বাবা আবু বক্কর সিদ্দিক, ভাই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ সিদ্দিক ওরফে রতন এবং ম্যানেজার মিনারুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন উজ্জল। আসামি করা হয় অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে। শুক্রবার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর গ্রামে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্টে অভিযান চালানো হয়। প্রথমে আদিয়ান মার্টের প্রধান কার্যালয় ঘিরে রাখা হয়। পরে রাতে প্রতিষ্ঠানটির সিইও কোম্পানিটির সিইও সদর উপজেলার মোমিনপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে জুবায়ের সিদ্দিকী ওরফে মানিককে (৩০) খুলনা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয় জুবায়েরের বাবা আবু বক্কর সিদ্দিক (৬৩), তার ভাই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ সিদ্দিক ওরফে রতন (৩০) এবং ম্যানেজার মিনারুল ইসলামকে (৩৫)। তিনি আরও জানান, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের টাকা প্রতারণাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। আমাদের কাছে তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। কয়েক মাস থেকে প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সেবাসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখেন গ্রেফতারকৃতরা। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সারা দেশে অসংখ্য ক্রেতা। তিনি আরও জানান, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্ট লিমিটেডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করার লোভ দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল। এমন বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই কোম্পানির সম্পর্কে অনুসন্ধান শুরু করে র্যাব। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১ হাজার ৮০০ এর মতো এনভয়েস অর্ডার বাকি আছে। দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় সোপর্দ করে র্যাব। পরে বিকেল ৪টার দিকে তাদের আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। বিকেল ৫টার দিকে তাদের চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় গ্রেফতারকৃতদের আদালতে তোলা হয়নি বলে জানান চুয়াডাঙ্গা কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক কেএম জাহাঙ্গীর কবীর। তিনি বলেন, আজ (গতকাল শনিবার) সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় আদালতের বিচার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির এক সদস্য মারা যাওয়ায় রোববারও কোর্ট বন্ধ থাকতে পারে। যদি রোববার কোর্টের কার্যক্রম বন্ধ থাকে তাহলে সোমবার তাদের আদালতে তোলা হবে। আপাতত তাদের জেলাহাজতে পাঠানো হয়েছে।