স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও খাদ্য সচিব ড. নাজমানারা খানুম বলেছেন, ‘অন্যান্য জেলার তুলনায় চুয়াডাঙ্গার করোনার পরিস্থিতি ভালো। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট না ঢুকে সেদিকে সচেষ্ট থাকতে হবে। তবে, সীমান্ত জেলায় ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্টের যে ছেলেটি পালিয়ে এসেছে তার অবস্থা কেমন? সেটা জানা দরকার। মানুষ আক্রান্ত আছে। মনিটরিং করা হচ্ছে। মানুষের জীবন ও জীবিকার জন্য ভাবতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। সমাজের প্রত্যেকটি নাগরিকের দায়িত্ব রয়েছে। এ বিশেষ সময়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’ গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া ব্যক্তিদের মাঝে মানবিক সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভায় খাদ্য সচিব ড. নাজমানারা খানুম প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেছেন। জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জেলা কমিটির সভায় পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন ও শাহ আলম সনি বক্তব্য রাখেন।
এসময় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া পারভীন, ইউএনও সাদিকুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম মইনুদ্দিন মুক্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমজাদ হোসেন ও হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি খাদ্য সচিব ড. নাজমানারা খানুম আরও বলেন, করোনা মহামারীর জন্য আরও বরাদ্দ করা যায় সেটা ভেবে দেখবো। স্থানীয় দানশীল মানুষেরা যেন অস্বচ্ছল মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়। করেনা বিশেষ গজব। সবাইকে ধৈর্য্যরে সাথে মোকাবেলা করতে হবে। শ্রমিকদের নিয়ে বসে ঠিক করতে হবে। সেন্ট্রল অক্সিজেনের ব্যাপারে আমার সহযোগিতা দরকার হলে জানাবেন।
জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, জেলার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে মালামাল ঢুকছে। মানুষ বন্দর দিয়ে ঢুকলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন। ৯৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৮০ জন্য বাড়িতে, ৮ জন হাসপাতালে এবং ৫ জন ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন পালন না করে ভারত থেকে পালিয়ে এসে বাড়ি চলে যাচ্ছে। পরে জানতে পেরে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গণপরিবহন ছাড়া সব চালু আছে। মাস্ক ব্যবহবার বেড়েছে। তবে শতভাগ হতে হবে। কিভাবে মাস্ক পড়ানো শতভাগ করা যায় সে চেষ্টা করে যাচ্ছি। ৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। তা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ভিজিএফ ও মানবিক সহায়তা ৪৫০ টাকা করে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৪টি আইসিইউ বেড তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হাইফ্লোকেনাল ১টি আছে, ৫টি পাওয়া যাবে এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন চালুর ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে, গতকাল বুধবার বেলা ১০টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাস শ্রমিকদের নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এসময় জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, মোটর মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. সালাউদ্দিন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম মইনুদ্দিন মুক্তা, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা এম জেনারেল ইসলাম, রিপন ম-ল এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, করোনা মহামারীর কারণে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভান্ডার তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এখান থেকে ত্রাণ সামগ্রী ও ইফতার বিতরণ করা হয়েছে। পরিবহন শ্রমিকদের ডেকেছিলাম। তারা এসেছিলো। তবে, ত্রাণ না নিয়ে চলে গেছেন। খুবই ন্যাকারজনক। যেভাবে তালিকা দিয়েছেন। ডেট দেন আমরা ত্রাণ দিয়ে দেবো। কেউ কোন উস্কানী দেয় তাদের ধরা হবে। আমরা পিছুপা না হয়। কোনো কিছু জানার থাকলে জেনে যাবেন। ত্রান সামগ্রী যা আসে তার চেয়ে বেশি দেয়া হয়। মানুষের কাছে সহযোগিতা নিয়ে মহামারীর জন্য কাজ করছি। এখন ছুটি চলছে। তারপরও কাজ করছি। আপনাদের সমন্বিত তালিকা তৈরি করেন।