স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নার্সরা আন্দোলনে যাচ্ছেন। সরকার ঘোষিত প্রণোদনার টাকা না পাওয়ায় তারা আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জানুয়ারির মধ্যে তাদের প্রণোদনা প্রাপ্তির ব্যাপারে সুস্পষ্ট আশ্বাস না পেলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে কর্মবিরতি দিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করবেন তারা। অন্যান্য জেলার স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্সরা প্রণোদনার টাকা পেলেও চুয়াডাঙ্গার নার্সরা প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে তারা আজও প্রণোদনার টাকা পাননি বলে তাদের অভিযোগ। প্রণোদনা পাওয়ার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কর্মরত ৮০ নার্স সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফরিদা খাতুন ও তহমিনা খাতুন বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এতোদিন আমাদেরকে আশ্বাস দিয়ে আসছিলো। কিন্তু এখন তাদের কাছে গেলে তারা বিরক্তি প্রকাশ করেন। কী কারণে আমাদের ন্যায্য পাওনা আমরা পাচ্ছি না, তা স্পষ্ট করে কিছুই জানি না। আমাদের পাওনা আমরা বুঝে নিতে চাই।’ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার ফেরদৌস আরা খাতুন বলেন, ‘কোভিড আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানে সরাসরি নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। সরকার তাদের দুই মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ এককালীন প্রণোদনা হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০২০-২০২১ সালে বরাদ্দকৃত ওই অর্থ দেশের অন্যান্য জেলার ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা পেলেও চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত কোনো নার্স পাননি। চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের অদক্ষতা ও গাফিলতির কারণেই এমনটি হয়েছে বলে আমরা মনে করি। শুধু প্রণোদনা নয়, কোভিড আক্রান্ত রোগীদের সেবায় নিয়োজিত নার্সদের পরিবার থেকে আলাদ থাকার জন্য বিশেষ একটি অর্থ দিয়েছে সরকার। সেই টাকাও পুরোপুরি বুঝে পাইনি আমরা।’ তিনি আরও বলেন ‘এ ব্যাপারে আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। আমাদের বিশ্বাস তিনি অতি দ্রুত একটি পদক্ষেপ নেবেন। আশাকরি চলতি জানুয়ারির মধ্যে এর একটা সুরাহ হবে। তা না হলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে আমরা আন্দোলনে যাবো। প্রথম পর্যায়ে কর্মবিরতির মতো কর্মসূচি দিয়ে আমাদের আন্দোলন শুরু করা হবে। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত সকল নার্স একাট্টা হয়েছে।’
সোমবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কর্মরত নার্সরা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন। জেলা প্রশাসকের অনুপস্থিতিতে স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আরাফাত রহমান। তিনি জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের পক্ষ থেকে দেওয়া স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেছি। যেহেতু জেলা প্রশাসক মহোদয় জেলার বাইরে আছেন। উনি এলেই স্মারকলিপিটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং আমাদের কিছু করণীয় থাকলে তাও করা হবে।’