দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা উপজেলা আনসার ভিডিপির কর্মকর্তা মোছা. রাফেজা খাতুনের বিরুদ্ধে কার্যালয়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মীর বেতনের প্রায় অর্ধলাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গত দেড় বছর যাবত তিনি ভুক্তভোগী ওই পরিচ্ছন্নতাকর্মীর বেতনের প্রায় আশি ভাগ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। চাকরি হারানোর ভয়ে মুখ খুলেন না ওই ভুক্তভোগী।
তথ্যানুসন্ধানে জান গেছে, প্রায় তিন বছর পূর্বে দামুড়হুদা উপজেলা সদরের কোষাঘাটা গ্রামের মাঝেরপাড়ার মৃত মনিরুদ্দিনের স্ত্রী জাহানারা খাতুন (৫০) দামুড়হুদা উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি ওই কার্যালয়ে কাজের জন্য কতো টাকা পারিশ্রমিক পেতে পারেন তা জানতেন না। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত পূর্বের কর্মকর্তারা তাকে মাস শেষে কখনো ১ হাজার আবার কখনো দেড় হাজার বা দৈনিক একশ টাকা করেও দিয়ে আসছিলেন। ২০২২সালের জানুয়ারি মাসে উপজেলা আনসার ভিডিপির কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন মোছা. রাফেজা খাতুন। ওই বছরের জুন মাস পর্যন্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী বিধবা জাহানারা খাতুনের বেতনের বরাদ্দ ছিলো ২ হাজার টাকা। অথচ ওই কর্মকর্তা তাকে প্রতি মাসে ৫শ টাকা করে দিয়ে আসছিলেন। ওই বছরের জুলাই মাস থেকে এখন অবধি তার বেতনের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২হাজার ৫শ টাকা অথচ তাকে সেই ৫শ টাকা করে দিয়ে আসছেন ওই কর্মকর্তা। আর বাকী টাকা তিনি আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মী জাহানারা খাতুনের বেতনের তথ্য অনুসন্ধানে একটি বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মে, জুন মাসে ওই কর্মচারীর বেতনের আড়াই হাজার টাকা করে মোট ৫হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। অথচ ওই পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে দেয়া হয়েছে মাত্র ১ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে পরিচ্ছন্নকর্মী বিধবা জাহানারা খাতুনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, প্রায় তিন বছর যাবত দামুড়হুদা উপজেলা আনসার ভিডিপির কার্যালয়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করে আসছি। পূর্বের স্যার, ম্যাডামরা অনেক সময় দিনে ১শ টাকা করে দিতেন এবং মাসের শেষে ১ হাজার টাকা দিতেন। রাফেজা ম্যাডাম যোগদানের পর থেকে তিনি আমাকে প্রতি মাসে ৫শ টাকা করে দিয়ে আসছে। আমি আজও পর্যন্ত জানি না যে আমার মূল বেতন কতো টাকা। গত মাসে আমাকে তিনি ১ হাজার টাকা দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, গত মাসে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি আমার বেতন ২হাজার ৫শ টাকা। ভয়ে কিছু বলতে পারি না, ম্যাডাম যদি চাকরি থেকে বের করে দেন! কদিন আগে এসব বিষয় নিয়ে অফিসে একটু ঝামেলা হয়েছে। ম্যাডাম আমাকে বারবার করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে নিষেধ করেছেন যাতে এবিষয়ে কারো সাথে কিছু না বলি।
দামুড়হুদা উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের কর্মকর্তা মোছা রাফেজা খাতুন দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, টাকা কম দেয়ার বিষয়টি সঠিক না। আমি তাকে প্রতি মাসে ২হাজার ৫শ টাকা করে দিই। যদি সে ৫শ টাকা দেয়ার কথা বলে তবে তা মিথ্যা বলেছে।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ করলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।