স্টাফ রিপোর্টার: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি দেয়া হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে-বর্তমান বাজারে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, মরিচ গুঁড়ো দুধ, শাকসবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামে অসহায় ক্রেতা। মোটা চাল এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, চিকন চাল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আটা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ভোজ্যতেলা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, মসুর ডাল ১১০ থেকে ১৩০ টাকা, গুঁড়ো দুধ ৫৯০ থেকে ৬৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকার নিচে নামে না। সবজিসহ প্রত্যেকটি জিনিস এই ভরা মরসুমে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্যামিতিকহারে এই দাম বৃদ্ধি সরকারের গণবিরোধী নীতির বর্ধিত প্রকাশ। হরিলুট, টাকা পাচারসহ সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতির ভয়াবহ ক্ষতি করে দফায় দফায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল, গ্যাস ও পানির দাম বৃদ্ধি করেছে আওয়ামী সরকার। এই বৃদ্ধির ‘চেইন রিঅ্যাকশন’ হিসেবেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম হু হু করে বাড়ছে। গত ১০ বছরে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি হয়েছে ৯০ শতাংশ, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪৪ শতাংশ, ডিজেলের দাম বেড়েছে ৮২ শতাংশ এবং পানির দাম বেড়েছে ২৬৪ শতাংশ। এই দাম বৃদ্ধি নজীরবিহীন ও অস্বাভাবিক। জনগণের নির্বাচিত সরকার থাকলে এই ধরণের সীমাহীন দাম বৃদ্ধি পেতো না। জবাবদিহিতা নেই বলেই দাম বৃদ্ধির পেছনে অনৈতিক সিন্ডিকেট কাজ করছে। ক্ষুধা ও অনাহারে ক্লিষ্ট জনগণের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে নিপতিত করেছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী, সরকারের কোনো দায় নেই। সারাদেশে দুর্ভিক্ষের ছায়া প্রতিদিনই বিস্তৃত হচ্ছে। ছাড়াও গাড়িভাড়া, বাড়িভাড়াসহ জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে লাগামহীনভাবে। এমনিতেই কর্মসংস্থান নেই, তার ওপর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস সাধারণ মানুষের। মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষকে পথে বসিয়ে দিচ্ছে। অভাবের তাড়নায় মা সন্তান বিক্রি করছে, কেউ কেউ আত্মহত্যা করছে।
চুয়াডাঙ্গায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা এ স্মারকলিপিটি প্রদান করেন। এ সময় স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাজিয়া আফরীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জেলা মহিলা দল সভানেত্রী রউফুন নাহার রিনা, জেলা বিএনপির সদস্য এম জেনারেল ইসলাম, আব্দুল জব্বার বাবলু, সিরাজুল ইসলাম মনি, আবু বরক সিদ্দিক আবু, নজরুল ইসলাম নজু, মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু, মোকাররম হোসেন, রাফাতুল্লা মহলদার, আমিনুল হক রোকন, মনিরুজ্জামান লিপ্টন, জেলা বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক বকুল, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, ইয়াছিন হাসান কাকন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু, সহসভাপতি সুজন মালিক, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ মোহাম্মদ রাজিব খান, যুগ্মসম্পদক জাহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক এমএইচ মোস্তফা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি এসারুল হক স্বরাজ, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক অপু মালিক জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. শাহাজাহান খান, যুগ্মসম্পাদক জুয়েল মাহমুদ, সহসভাপতি মতিয়া রহমান মিশর, যুগ্মসম্পাদক আমানুল্লাহ আমান প্রমুখ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মেহেরপুর জেলা বিএনপি’র জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে। জেলা বিএনপির পক্ষে পৃথকভাবে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। মেহেরপুর জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুর রহমান, ইলিয়াস হোসেন উপস্থিত থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লিংকন বিশ্বাস স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। স্মারকলিপি প্রদানের সময় অন্যদের মধ্যে পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাসসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ওমর ফারুক লিটন ও যুগ্ম সম্পাদক প্রভাষক ফয়েজ মোহাম্মদের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসক (ভার.) লিংকন বিশ্বাসের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। এ সময় মেহেরপুর জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মিজান মেনন, সাবেক ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেন, জেলা যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক শেখ হুজাইফা ডিক্লিয়ার, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম, ডা. মো. ইয়াসিন, জেলা যুবদল সদস্য মনিরুল ইসলাম, খাইরুল ইসলাম, মো. ইসমাইল জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নাহিদ মাহবুব সানি, যুগ্ম সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম মিন্টুসহ সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন উদ্দিন, জেলা নবীন দলের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।