স্টাফ রিপোর্টার: মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন এক নারীসহ চুয়াডাঙ্গার চার মাদক ব্যবসায়ী। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হাজির হয়ে পুলিশ সুপারের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তারা। এ সময় তারা ভবিষ্যতে আর কখনো মাদক ব্যবসা বা মাদকের সাথে জড়িত থাকবেন না বলেও পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের কাছে প্রতিশ্রুতি দেন। আত্মসমর্পণকারীরা হলেন- জেলার দামুড়হুদা উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের জমির আলীর ছেলে জহুরুল ইসলাম ওরফে সুন্নত আলী (৩৮), বানাত আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (৫০), মৃত মইজ উদ্দীনের ছেলে তোতা ফকির (৫৫), ও ইব্রাহীম আলীর স্ত্রী রহিমা আক্তার ওরফে ডলি (৩২)। পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম মাদক ব্যবসায়ীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে জীবনযাপন করার সুযোগ দিয়েছেন। আত্মসমর্পণকারীরা তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রাখবেন নাকি ভঙ্গ করবেন পুলিশ সুপারের কাছে করা প্রতিজ্ঞা? এখন এটাই দেখার পালা।
আত্মসমর্পণকারীরা পুলিশ সুপারের নিকট হাজির হয়ে বলেন, ‘তাদের ছেলে-মেয়েরা বড় হয়েছে। তারা বুঝতে শিখেছে মাদক ব্যবসা করা অন্যায়-অপরাধ। এতোদিন তারা ভুল পথে ছিলেন। মাদক ব্যবসা করার কারণে সমাজের সকল লোক তাদের ঘৃণার চোখে দেখে। সবসময় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার আতঙ্কে কাটাতে হয়। তাছাড়া, আমাদের অপরাধের কারণে তার ফল ভোগ করতে আমাদের ছেলে-মেয়েদের।
মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের ছেলে-মেয়েদের কথা চিন্তা করে এবং বর্তমান মাদকবিরোধী অভিযানের তৎপরতা অনুধাবন করে মাদকব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আশার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা পুলিশ সুপারের কাছে আত্মসমর্পণ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পরিবারসহ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হাজির হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের কাছে প্রতিজ্ঞা করে বলে আর কখনো মাদকের সাথে জড়িত হবে না।
এ সময় পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম সকল মাদক ব্যবসায়ীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আশার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মাদক একটি ভয়ানক নেশা, উঠতি বয়সের স্কুল, কলেজ পড়–য়া ছাত্র, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, দিনমজুরসহ সমাজের সকল স্তরের মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মাদক ব্যবসায়ী যতো শক্তিশালীই হোক না কেন, তাদেরকে দেশ ছাড়তে হবে, না হলে ব্যবসা ছাড়তে হবে। যে সকল মাদক ব্যবসায়ী ইতোমধ্যে আত্মসর্মপণ করেছেন তাদেরকে নিরীক্ষণে রাখা হয়েছে। কোন আত্মসর্মপণকারী মাদক ব্যবসায়ী পুনরায় মাদক ব্যবসায় জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।