২৪ ঘন্টায় ৬ হাজার ৮৪৫টি নমুনা সংগ্রহ : পরীক্ষা করা হয় ৬ হাজার ৭৭৩টি
স্টাফ রিপোর্টার: দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট ২৫০ জনের প্রাণহানি হলো। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৯৬৯ জন। সব মিলিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৬ হাজার ৬৬০ জনে। গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও ছয় হাজার ৮৪৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ছয় হাজার ৭৭৩টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ৩৬ হাজার ৬৩৮টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ৯৬৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৬৬০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১১ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৫০ এ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২৪৫ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিন হাজার ১৪৭ জন। নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের সাতজন পুরুষ ও চারজন নারী। তিনজন পঞ্চাশোর্ধ্ব, পাঁচজন ষাটোর্ধ্ব, দুজন সত্তরোর্ধ্ব এবং একজন ৮০ থেকে ৯০ বছর বয়সী। অবশ্য মোট সংখ্যা ১১ বলা হলেও এলাকাভিত্তিক পরিসংখ্যানে একজন কম বলা হয় বুলেটিনে। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১১ জনের মধ্যে পুরুষ ৭ জন এবং নারী ৪ জন। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ঢাকা মহানগরে ৫ জন, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে একজন করে, চট্টগ্রাম বিভাগে ২ জন ও সিলেট বিভাগে একজন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সি দুজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। সোমবার মারা গিয়েছিলেন ১১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায়ও মারা গেছেন ১১ জন। এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেলেন ২৫০ জন। সোমবার সংক্রমিত মানুষ শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা জানানো হয়েছিলো ১ হাজার ৩৪ জন। আজকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত ১৬ হাজার ৬০৭ জন শনাক্ত হলেন।
দেশে এখন ৩৭টি ল্যাবে (পরীক্ষাগার) করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্তের ঘোষণা আসে। আর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আক্রান্ত আরও ১২২ পুলিশ এদিকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১২২ জন পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে বাহিনীটিতে সর্বমোট ১ হাজার ৮৭৮ জন সদস্যের মধ্যে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৩৩ জন পুলিশ সদস্য হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে সর্বমোট ২৯৮ জন পুলিশ সদস্য সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। মঙ্গলবার সকালে সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী সংশ্লিষ্টরা এসব তথ্য জানান। জানা গেছে, সোমবার (১১ মে) বাহিনীটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৭৫৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১২২ জন যুক্ত হয়ে এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৮৭৮। আক্রান্তদের মধ্যে শুধু ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সদস্যই রয়েছেন ৮৬৫ জন। সোমবার পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিলো ৮১০ জন। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, পুলিশের ১ হাজার ১৫৯ জন সদস্য বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন। আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছেন এমন সন্দেহে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে আরও ৪ হাজার ৯৬১ জন সদস্যকে। এখন পর্যন্ত পুলিশের ৭ সদস্য করোনা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গ করেছেন। তারা হলেন- ডিএমপির কনস্টেবল জালাল উদ্দিন খোকা (৪৭), এএসআই রঘুনাথ রায় (৪৮), কনস্টেবল জসিম উদ্দিন (৪০), এএসআই মো. আব্দুল খালেক (৩৬), কনস্টেবল মো. আশেক মাহমুদ (৪৩), এসআই সুলতানুল আরেফিন ও এসবির এসআই নাজির উদ্দীন (৫৫)। রোববার (১০ মে) পর্যন্ত ১৪৭ জন করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্য সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। পুলিশ সদর দফতর জানায়, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন। আইজিপির নির্দেশে অসুস্থ পুলিশ সদস্যদের দেখাশোনার জন্য গঠন করা হয়েছে ‘বিশেষ টিম’। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল ছাড়াও রাজধানী এবং বিভাগীয় শহরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন বেসরকারি হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।