দর্শনা/দামুড়হুদা অফিস: রাজস্ব খাতের কোনো জনবল ছাড়াই চলছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার শিল্পনগরী দর্শনায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রটি। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের ৩ জন অদক্ষ কর্মকর্তা কর্মচারী দিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। উপজেলার দর্শনা এলাকায় প্রচুর পরিমাণ পশু খামার রয়েছে। সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার এসব খামারীরা।
প্রাণিসম্পদ অফিসসূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শিল্পনগরী দর্শনায় ২০০৭ সালে ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠানটির দ্বিতীয় ভবন নির্মাণ করা হয়। এরপর খেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললে ও একজন কম্পাউডার মোসারফ হোসেন সেবা দিয়ে আসছিলেন এখানে। গত চার মাস আগে সে অবসরে যাবার পর থেকে সেখানে রাজস্ব খাতের কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী নেই। বর্তমানে ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে তৃতীয় তলায় প্রশিক্ষণের জন্য একটি কক্ষের কাজ চলমান প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রটিতে একজন ভেটেরিনারি সার্জন, একজন কম্পাউন্ডার, একজন ড্রেসার ও একজন প্রজনন কর্মীর পদ থাকলে ও সকল পদই রয়েছে শূন্য। বর্তমানে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের একজন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও দুইজন সহকারী দিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম। এ এলাকায় বেশকিছু বলদ, গাভী, ছাগল, হাস ও মুরগির খামার রয়েছে। এছাড়া ও প্রায় প্রতি বাড়িতেই গরু মোটাতাজাকরণসহ ছাগল, হাস, মুরগী পালন করে থাকে এলাকার কৃষকগণ। দক্ষ কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী না থাকায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে খামারিসহ পশু পালনকারীরা।
দর্শনা ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের আরজে এগ্রো ফার্মের মালিক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তার খামারে ১০টি গরু, ৪০টি, ছাগাল ১৫০টি হাস ও প্রায় ২০০ কবুতর রয়েছে। তিনি দর্শনা প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে তেমন কোনো সুবিধা পান না। কারণ এখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোনো ডাক্তার নেই। কোন প্রয়োজনে দামুড়হুদা প্রাণিসম্পদ অফিসে যেতে হয়। গরু, ছাগল, হাস, মুরগী ও পশু পাখির কোনো সমস্যা দেখা দিলে দামুড়হুদা প্রাণিসম্পদ অফিসে ফোন দিলেই প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মসিউর রহমান দামুড়হুদা থেকে ছুটে আসেন। আমাদেরকেও ছুটে যেতে হয় দামুড়হুদা অফিসে। এতে করে অনেক সময় নষ্ট হয়। বাধ্য হয়ে অনেক সময় গ্রাম্য পশু চিকিৎসক দিয়ে গরু ছাগল চিকিৎসা করাতে হয়। দক্ষ চিকিৎসক নিয়োগ দিলে আমরা এখান থেকে অনেকটাই সুবিধা পেতে পারি; আমরা দর্শনা থেকেই আমাদের সকল কাজ শেষ করতে পারি। তাই এখানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল প্রয়োজন। জনবল দিলে আমাদের আর এতো সময় নষ্ট করে দামুড়হুদা অফিসে যেতে হতো না।
দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান বলেন, দর্শনা পৌর এলাকায় অনেকগুলো ছোট বড় গরু, ছাগল, হাস ও মুরগীর খামার রয়েছে। কিন্তু এখানে কোনো দক্ষ কোনো জনবল নেই। তার নিজেরই দামুড়হুদা প্রাণিসম্পদ ও দর্শনা প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রটি দেখাশোনা করতে হয়। প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রটিতে দক্ষ কোনো জনবল না থাকায় ছোট বড় খামারীসহ সাধারণ পশু পালনকারীরা কিছুটা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এখানে একজন ভেটেরিনারি সার্জন, একজন কম্পাউন্ডার, একজন ড্রেসার ও একজন প্রজনন কর্মীর খুবই দরকার। প্রয়োজনীয় জনবলের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লেখালেখি করা হচ্ছে আশা করা যাচ্ছে দ্রুত এর সমাধান হবে।