বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার দোস্ত গ্রামে দাদীর সামনেই তার কলেজপড়–য়া নাতীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী দু’সন্তানের জনক মহিদুলের বিরুদ্ধে। মহিদুলকে আটক করা হলে তার বাড়ির লোকজন কলেজছাত্রীর মা, বাবা, দাদা, দাদীকে পিটিয়ে আহত করে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় অভিযুক্তকে। এ ঘটনায় কলেজছাত্রী বাদি হয়ে থানায় মামলা করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি মহিদুলকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। এদিকে মামলা করায় আসামির পক্ষ থেকে বাদির পরিবারকে নানাভাবে হুমকি ধামকি অব্যাহত রাখা হয়েছে। ফলে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটছে কলেজছাত্রীর পরিবারের।
অভিযোগে জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামের বসুতিপাড়ার রুহুল আমিনের মেয়ে দর্শনা সরকারি কলেজের দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্রী তুলি খাতুন হাবিবা (১৮) মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিলে দাদী রাহেদা খাতুনকে সাথে করে বাড়ির বাইরে অবস্থিত বাথরুমে যান। বাথরুমের কাজ সেরে তুলি ঘরের ফেরার সময় প্রতিবেশি হাশেমের ছেলে দু’সন্তানের জনক মহিদুল ইসলাম পেছন দিকে থেকে মুখ চেপে জাপটে ধরে মাঠের দিকে নেয়ার চেষ্টা করে। সাথে থাকা দাদী তাতে বাঁধা দিতে গেলে তাকে লাথি মেরে ফেলে দেয় মহিদুল। একপর্যায় তুলি চিৎকার চেচামেচি করলে বাড়ির লোকজন সকলেই উঠে পড়ে। তুলির পরিবারের লোকজন মহিদুলকে জাপটে ধরে চিৎকার চেচামেচি করতে থাকে। একপর্যায় মহিুদুলের ভাই রফিকুল (৩০), পিতা হাশেম (৫০), মা নাসিমা লাঠিসোটা নিয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে তুলির মা, বাবা, দাদা, দাদীকে পিটিয়ে আহত করে মহিদুলকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। তুলির পিতা রুহুল আমিন অভিযোগ করে বলেন, মহিদুলকে ছাড়িয়ে নিয়ে আমাদেরকে বাড়ির মধ্যে অবরুদ্ধ করে রাখে। সকালে হিজলগাড়ী ক্যাম্প পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমাদের মুক্ত করে। এ ঘটনায় তুলি বাদি হয়ে মহিদুলকে প্রধান আসামি করে তার ভাই রফিকুল, পিতা হাশেম ও মা নাসিমাকে আসামি করে দর্শনা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। অপরদিকে মামলা দায়েরের পর দর্শনা থানার সেকে- অফিসার এসআই আহম্মেদ বিশ্বাস, হিজলগাড়ী ক্যাম্প পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে দুপুরের দিকে মামলার প্রধান আসামি মহিদুলকে গ্রামের মাঠ থেকে গ্রেফতার করেছে। মামলার বাদি তুলি জানায়, দু’সন্তানের জনক মহিদুল দীর্ঘদিন থেকে নানাভাবে আমাকে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। আমি তাতে সাড়া না দিলে মঙ্গলবার রাতে আমাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাবার চেষ্টা চালান মহিদুল। কারণ মহিদুলরা অনেক প্রভাবশালী। গ্রামে তিনি এর আগেও অনেক ঘটনা ঘটালেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। মহিদুলের মা তার ছেলের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ছেলে ষড়যন্ত্রের শিকার। এ ব্যাপারে দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি লুৎফুল কবির বলেন, মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।