চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় সাতদিনের লকডাউনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বুধবার ভোর ৬টা থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত লকডাউন কার্যকর হবে। মঙ্গলবার দুপুর ১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম সরকার বিধিনিষেধ কার্যকরের গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়ক, মহাসড়ক এবং নৌপথে অন্য কোনো জেলা, উপজেলা থেকে জীবননগর উপজেলায় প্রবেশ কিংবা ওই উপজেলা থেকে বাইরে গমন করতে পারবে না। সব ধরনের গণপরিবহন ও জন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিষেবা, ওষুধ, চিকিৎসা সেবা, কৃষি পণ্য, নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ ও পরিবহন এবং সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং সেবা আওতা বহির্ভূত থাকবে। গরুর হাট এবং পান হাট বন্ধ থাকবে। কাঁচাবাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২ পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচা করা যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, হোটেল রেস্তোরাঁ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত খাদ্য বিক্রয় ও সরবরাহ করা যাবে। কোনো অবস্থায় হোটেল রেস্তোরাঁয় বসে খাবার খাওয়া যাবে না। শপিংমল ও অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে। সকল পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ ঘটে এ ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। মাস্ক পরিধানসহ সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মুনিম লিংকনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন-চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর। বিশেষ অতিথি ছিলেন-জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী হাফিজুর রহমান, জীবননগর পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, জীবননগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম ঈশা, জীবননগর উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলাতানা লাকী, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সেলিমা আখতার, জীবননগর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ। জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সেলিমা আখতার জানান, জীবননগর উপজেলায় করোনা সংক্রমণে ৩ জন মারা গেছেন। এছাড়াও উপজেলার আরো ৫ জন বিভিন্ন হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা নিতে গিয়ে মারা যায়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ১৩০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন ২৩ জন। হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১০৭ জন। জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মুনিম লিংকন জানান, জীবননগরে করোনা সংক্রমণের হার দ্রুত বৃদ্ধি ও মৃত্যুর ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় সাতদিনের লকডাউন কার্যকর করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উ ল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও আলুকদিয়া ইউনিয়নে চলমান কঠোর লকডাউনের আজ তৃতীয় দিন। দামুড়হুদা উপজেলার ১৪ দিনের লকডাউনের আজ ৯ম দিন।