জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলায় মনোহরপুর-খয়েরহুদা গ্রামীণ সড়কে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বন্ধে মনোহরপুর বাসস্ট্যান্ডে খয়েরহুদা, মনোহরপুর ও কাশিপুর গ্রামবাসীর মানববন্ধন। এ সময় তারা প্রতিবাদসভাও করে। গতকাল শুক্রবার এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, মনোহরপুর, খয়েরহুদা, কাশিপুর ও আন্দুলবাড়িয়া সড়কে প্রায়ই ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ৩০ বছর ধরে এ রাস্তায় ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে আসছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত প্রশাসনের কার্যকারী ভূমিকা দেখতে পাওয়া যায় না। এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটলে প্রশাসন কয়েকদিন সজাগ থাকে। পরে আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়। এতে ভুক্তভোগী তিন গ্রামের মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। এসব গ্রামের ২০০/৩০০ জন জীবননগর, দর্শনা ও চুয়াডাঙ্গা বাজারে ব্যবসা করেন। প্রতিদিন রাতে এই রাস্তা দিয়ে আতঙ্কের নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। এলাকায় ডাকাতি ও ছিনতাই বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানায়।
মানববন্ধনে স্থানীয়দের দাবি এলাকায় একটি পুলিশ বক্স বসানো হোক। সেই সাথে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানানো হয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, জীবননগর উপজেলায় ছিনতাই ও ডাকাতি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে; তবুও প্রশাসনের তেমন ভূমিকা আমাদের চোখে পড়েনি। এভাবে চুরি ছিনতাই ডাকাতির ঘটনা ঘটলে আমরা চলাচল করবো কিভাবে? আমরা যারা ব্যবসা বাণিজ্য করি ঘরে ফিরতে ভয় হয়। এই বুঝি আমি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে গেলাম। এমন ভয় ভয় নিয়ে চলবো কতোদিন?
সর্বশেষ ১৫ আগস্ট রাতে এই সড়কে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন জীবননগর বাজারের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী রনি ট্রেডার্সের পরিচালক স্থানীয় বাসিন্দা কৌশিক আহম্মেদ জনি, তিনি বলেন ১৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাসায় ফেরার পথে ৪/৫ জন তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার নিকট থেকে ওদিন ৫ হাজার ২৫৫ টাকা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং ৪ মাস আগে একই স্থান থেকে ২২ হাজার ছিনতাই করে নেয়।
এর ১৫দিন আগে একই সড়কে আরও তিনজন ডাকাতির শিকার হন। ভুক্তভোগী দুলাল বলেন, ব্যবসার কাজ শেষে রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে গাড়ি গতিরোধ করে ৫/৬জন ছিনতাইকারী দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমার হাত, পা ও মুখ বেঁধে আমার নিকট থেকে সোনার আংটি, চেন ও নগদ টাকা নিয়ে মাঠের মাঝে আমাকে ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন। এছাড়াও টায়ার ব্যবসায়ী দুলুল ইসলামের নিকট থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা ছিনতাই করে নেন। তাছাড়া সাপ্তাহিক বাজার ও পশুহাটের দিন তাদের উৎপাত হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মানববন্ধনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন, মনোহরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রসুল, সাধারণ সম্পাদক বকুল হোসেন, মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, বিআরডিবির সাবেক কর্মকর্তা আবুল হাসান, ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক কর্মকর্তা সৈয়কতকুল ইসলাম চৌধুরী, সাংবাদিক আকিমুল ইসলাম, স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
এ বিষয়ে জীবননগর থানার ওসি আব্দুল খালেক সাংবাদিকদের বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। কেডিকে ও মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখানে পুলিশ বক্স বসানোর চেষ্টা চলছে।