স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আসমানখালী পানের হাটে জামায়াতের গণসমাবেশ ও দোয়ার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে গাংনী-আসমানখালী প্রশাসনিক থানা জামায়াতের থানা আমির আব্বাস উদ্দীন। প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমির আয়কর আইনজীবী রুহুল আমিন। প্রধান অতিথি রুহুল আমিন বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এ অঞ্চলে ৮৩টি বছর ইসলামের দাওয়াতি কাজ করছে। তিনি জানান, জামায়াত সৎ লোকের শাসন ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ কায়েম করতে চাই। মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। তিনি বলেন, আমরা কখনো আমাদের কর্মীদের শেখায়নে তোমার খাল দখল করো, হাট দখল করো, তোমরা টেন্ডারবাজি করো, তোমরা মাস্তানি করো। জামায়াত কোনো অন্যায় করেনি, তারপরও ফরমায়েশি রায় দিয়ে জামায়াতের নিরাপরাধ নেতাদের হত্যা করেছে। বঙ্গভবন থেকে রায় লিখে পাঠিয়ে দিতো অথবা অর্ডার লিখে পাঠিয়ে দিতো। ওকে জেল দাও, ওকে জামিন দাও, ওকে ফাঁসি দাও, এমন বিচারপতিরা তাদের চেয়ারে বসে এমন বিচার করে গেছেন। কারো যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছে, কারো ফাঁসি দেয়া হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে আমরা দেখলাম যখন ট্রাইবুন্যাল তৈরি হলো বিচারপতি জিয়াউল হায়দারের সাথে কথা বলে রায় ফাঁস করা হয়েছে। সেই স্কাইবে কথোপকথোনে জানা যায়, কীভাবে কাদের মোল্লার ঝুঁলিয়ে দেয়া যায়, কীভাবে মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী সাহেবকে ফাঁসি দেয়া য়ায়, কীভাবে সালাউদ্দীন কাদেরকে চৌধুরীকে ঝুঁলিয়ে দেয়া যায়, মতিউর রহমান নিজামীকে ঝুঁলিয়ে দেয়া যায়। তিনি বলেন, ২০০১ সালের জামায়াত, আর ২০২৪ সালে জামায়াতকে এক মনে করা ঠিক হবে না। সংগ্রামী উপস্থিতি আমাদের ব্যাংকগুলোকে ডাকাতের দল লুট করে নিয়ে গেছে, আমাদের বিমা কোম্পানিগুলোকে লুট করে নিয়ে গেছে, বিগ্রেডিয়ার আজমীর মতো চৌকস অফিসারকে জোরপূর্বক অবসর দিয়েছে, শুধু দাঁড়ি রাখার অপরাধে, নামাজ পড়ার অপরাধে চাকরিচ্যুত করেছে অসংখ্য ইমামকে, শুধুমাত্র আমাদের সাথে সম্পর্ক রাখার কারণে যারা কাজীগিরি করেন, তাদের লাইসেন্স বাতিল করে দেয়া হয়েছে। আমাদের কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করিয়েছেন, তাদের চাকরি চলে গেছে। আমাদের চেয়ারম্যানদের মামলা দিয়েছে, পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে গেছে। ৫দিন জেলখাটার পর তারা চেয়ারম্যানশিপ আর ফেরৎ পাইনি। আমাদের অনেক কষ্টের পর আমরা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলাম; এক রাত্রে দরবেশ বাবা সব লুট করেছে। আপনি পালাবার সময় দাঁড়িটাও রক্ষা করতে পারেন নাই। আমরা যে অফিসগুলোতে বসতাম সেই অফিস শুধু বন্ধ করেননি, তার সম্পদগুলে লুট করে নিয়ে গেছেন। আমাদের সন্তানদের ক্রস ফায়ার দেয়ার পর আমরা পালিয়ে যাইনি। আপনি পদ্মা সেতুতে কতো টাকা দুর্নীতি করেছেন তা বলবেন, তাতে আপত্তি নেই, বেগমপাড়ায় আপনার কতটি বাড়ি আছে, তা বলবেন তাতে আমাদেও আপত্তি নেই, মিথ্যা কথা বলবেন, তাতে আপত্তি নেই; আপনার কর্মীরা চাঁদাবাজি করবে, অফিস দখল করবে, সে ব্যাপারে আমাদের আপত্তি আছে। আপনাদের বিরুদ্ধে দিগন্ত টিভি কথা বলতে গেছে , আর দিগন্ত টিভি বন্ধ করে দিয়েছেন, চ্যানেল-ওয়ান যখনই আপনার বিরুদ্ধে কথা বলেছে, তখনই চ্যানেল-ওয়ান বন্ধ করে দিয়েছেন, এমনিভাবে ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দিয়েছেন, সাগর-রুনিকে হত্যা করেছেন, আমাদের দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছেন। মাহমুদুর রহমান কথা বলতে গেছেন তাকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন, মারুফ-সরোয়ার কথা বলতে গেছেন তাকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন, ইলিয়াস কথা বলতে গেছেন তাকে গুম করা হয়েছে। তিনি বলেন, ৫ তারিখে শাপলা চত্বরে আলেমদের হত্যা করেছেন, আপনি সেনা বাহিনীর ৫৭জন চৌকস দেশপ্রেমিক অফিসারকে হত্যা করেছেন, আপনি বৈষম্যবিরোধী হাজার হাজার ছাত্রকে হত্যা করেছেন এর হত্যার বিচার হবে। তিনি বর্তমান সরকারকে বলেন, এন্টি ফারাক্কার জন্য পরির্কপনা করেন দেশের মানুষ আপনার সাথে আছে। ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি কাইয়ুমুদ্দিন হিরোকের উপস্থাপনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাড. আসাদুজ্জামান আসাদ, সহকারী সেক্রেটাার অ্যাড. মাসুদ পারভেজ রাসেল, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য আলতাফ হোসেন, থানা জামায়াতের নায়েবে আমির সেলিম উদ্দীন মাস্টার, মনিরউদ্দীন, সহকারী সেক্রেটারি হুমাউন কবীর, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, গাংনী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির হাজি আব্দুস সালাম, হারদী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাও. গিয়াস উদ্দীন, চিৎলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাও. মিজানুর রহমান, বাড়াদী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমির কামরুল হাসান সোহেল প্রমুখ।