স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১২ আগস্ট ২০২০ তারিখের পত্রটি বাতিল পূর্বক অধিগ্রহণকৃত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিধিমালা ২০১৩ এর ধারা-২ উপধারা (গ) তে বর্ণিত বেসরকারি চাকরির ৫০% কার্যকর চাকরিকালের ভিত্তিতে টাইমস্কেলসহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধাদি, জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতি বহাল করণের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
চুয়াডাঙ্গায় গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির আহ্বায়ক মশিউর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক রহমতুল্লাহ, দামুড়হুদা উপজেলার আহ্বায়ক আকবর আলী, যুগ্ম-আহ্বায়ক রেজাউল ইসলাম, জীবননগর উপজেলার যুগ্ম-আহ্বায়ক মজিবর রহমান, আলমডাঙ্গা উপজেলার যুগ্ম-আহ্বায়ক আনিছুর রহমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এসময় বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যেও ১৯৭৩ সালে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রায় ৩৭ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৮ বছর পূর্বের প্রশাসন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে অধিগ্রহণকৃত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিধিমালা এসআরও নং ৩১৫ আইন ২০১৩ গেজেট প্রকাশের পূর্বে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে বিধিমালার সকল ধারা, উপধারার সম্মতি গ্রহণ করে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ইং তারিখে গেজেট প্রকাশ করে। পরে জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের বেতনভাতা নির্ধারণসহ পর্যায়ক্রমে আর্থিক সুবিধাদি প্রদানে অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ব্যয় অনুবিভাগের ২০১২ সালের ২৭ জানুয়ারি, ২০১৩ সালের ৩ জুন ও ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি সম্মতি গ্রহণ পূর্বক বিধিমালার বিধি-২, উপবিধি (গ) তে বর্ণিত বেসরকারি চাকরির ৫০ ভাগ কার্যকর চাকরিকালের ভিত্তিতে ও বিধিমালার ১২ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৪ সালের ৫ জুন কিছু ধারা, উপধারা স্পষ্ট করে পরিপত্র জারি করে শিক্ষকদের টাইমস্কেলসহ সকল সুবিধাদি প্রদান করে। কিন্তু গত বছরের ১২ আগস্ট অর্থমন্ত্রণালয়ের বর্তমান প্রশাসন আকস্মিকভাবে বিধিমালার ভুল ব্যাখা দিয়ে দীর্ঘ ৮ বছর পর এক পত্রে শিক্ষকদের টাইমস্কেল বাতিল করে এবং গৃহীত অর্থ ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়। এতে চরম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষক ও তাদের পরিবার। অবিলম্বে ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে টাইমস্কেল ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধাদি বহাল রাখা দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষকরা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে সংগঠনটি।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতি মেহেরপুর জেলা শাখার উদ্যোগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১২ আগস্ট ২০২০ তারিখের পত্রটি বাতিল পূর্বক অধিগ্রহণকৃত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিধিমালা ২০১৩ এর ধারা-২ উপধারা (গ) তে বর্ণিত বেসরকারি চাকরির ৫০% কার্যকর চাকরিকালের ভিত্তিতে টাইমস্কেলসহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধাদি, জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতি বহাল করণের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকালে মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতি মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি মো. কমর উদ্দিনের নেতৃত্বে মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, মেহেরপুর সদর উপজেলা শাখার সভাপতি ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, গাংনী উপজেলা সভাপতি জিয়া মো. আহসান মাসুম, সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান, মুজিবনগর উপজেলা সম্পাদক ময়নুদ্দিন, জেলা কমিটির প্রচার সম্পাদক আবু লায়েচ লাবলু, প্রধান শিক্ষক শহিদুল আজম, ইকাব আলী, প্রধান শিক্ষক নূরুল গনি প্রমুখ। পরে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এতে অধিগ্রহণকৃত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিধিমালা ২০১৩ এর ধারা-২, উপধারা (গ) তে বর্ণিত বেসরকারি চাকরির ৫০% কার্যকর চাকরিকালের ভিত্তিতে টাইমস্কেলসহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধাদি, জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতি বহাল করণের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান।