চুয়াডাঙ্গা জেলা বার’র সভাপতি অ্যাড. আলমগীর হোসেনের ইন্তেকাল

সর্বস্তরে শোক : আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জান্নাতুল মওরা কবরস্থানে নামাজে জানাজা শেষে দাফন

স্টাফ রিপোর্টার : চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নিরপদ সড়ক চাই আন্দোলনের নেতা জেলা লোকমোর্চা সভাপতি অ্যাড. আলমগীর হোসেন ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহে … রাজেউন) । ঢাকার স্কোয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৬৩ বছর। স্ত্রী, এক ছেলে , দুই মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন এ গুণি আইনজীবী। তিনি চুয়াডাঙ্গা শহরের কোর্টপাড়ায় নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জান্নাতুল মওলা কবরস্থান জামে মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হবে।
বৈশি^ক মহামারি করোনা তাকে কেড়ে নিলো। গতকাল এ মৃত্যু খবর চুয়াডাঙ্গায় ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে। সামাজিক মাধ্যমগুলোতে অসংখ্য মানুষ শোক জানিয়ে বলেন, চুয়াডাঙ্গার একজন গুণি মানুষ না ফেরার দেশে চলে গেলেন। যে মানুষটি সব সময় নিজের মধ্যে ন্যায় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ছিলো। অন্যায়ের বিরুদ্ধে যার ছিলো অবিরাম যুদ্ধ সেই যোদ্ধাকে হারিয়ে শোকাহত জেলার প্রায় সকলে। অ্যাড. আলমগীর হোসেনের মৃত্যুতে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর, জেলা জজ মো. জিয়া হায়দার, চিপ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড তালিম হোসেন, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. সেলিম উদ্দীন খান, অ্যাড. মসলেম উদ্দীন, অ্যাড. এসএম রফিউর রহমানসহ অনেকেই শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। এ ছাড়াও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ সামসুল আবেদীন খোকন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জেরা বারের সদস্য অ্যাড ওয়াহেদুজ্জামান বুলা শোক বার্তায় শোক জানিয়ে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সবেদনা জানিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি দৈনিক মাথাভাঙ্গা সম্পাদক সরদার আল আমিনও শোক জানিয়ে বলেছেন, আমরা একজন সহযোদ্ধাকে হারালাম। আলমগীর হোসেনের মতো একজন নীতিবান নেতাকে হারানোর মধ্য দিয়ে যে শূন্যতা সৃষ্টি হলো তা পুরণ হবার নয়।
অ্যাড. আলমগীর হোসেন ১৯৫৮ সালের ২২ জানুয়ারি দামুড়হুদা উপজেলার বড় দুধপাতিলা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা আতেয়ার হোসেন এবং মাতা মমতাজ বেগম। অ্যাড. আলমগীর হোসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে লেখাপড়া শেষে ১৯৮৬ সালের ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্ত হন এবং চুয়াডাঙ্গা বারে যোগদান করেন। তিনি জেলা আইনজীবী সমিতির তিন বার সভাপতি পদে এবং দুই বার সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। তিনি নিরাপদ সড়ক চাই জেলা কমিটির সভাপতি ও সামাজিক সংগঠন জেলা লোকমোর্চার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এছাড়া, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বহু সামাজিক সংগঠনের সাথে তিনি জড়িত ছিলেন। তার মৃত্যুতে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শোক বার্তায় বলেছেন, বারের সভাপতি আলমগীর হোসেনের মৃত্যুতে বারের সদস্যরা একজন নিবেদিত প্রাণ আইনজীবী নেতাকে হারালেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড. ওয়াহেদুজ্জামান বুলা বারের সভাপতি অ্যাড. আলমগীর হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন। তিনি মরহুমের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত: অ্যাড আলমগীর হোসেন কিছুদিন আগে সর্দি কাশি জ¦রে আক্রান্ত হন। তিনি নমুনা পরীক্ষা করান। ১৩ জুন করোনা পজেটিভ হয়। ১৬ জুন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ১৯ জুন নেয়া হয় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার বিকেলে মারা যান। গতকালই তার মৃতদেহ নিয়ে লাশবাহী গাড়ি চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা হয়। পরিবারের সদস্যরা আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জান্নাতুল মওলা কবস্থান জামে মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে দাফন কাজ সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

 

Comments (0)
Add Comment