ষ্টাফ রিপোর্টার: ‘আমাদের লক্ষ্য বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র, তারুণ্যের বিদ্রোহে ভেসে যাক অন্যায় আর বৈষম্যের বাধ’ মূল মন্ত্রকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল শনিবার বিকাল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগ এ সম্মেলনের আয়োজন করেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলী। এ সময় তিনি বলেন, পাকিস্তানী শাসকদের হাত থেকে এদেশের সম্পদ লুট, সকল ক্ষেত্রে বাঙ্গালীদের প্রতি বৈষম্য বন্ধ, ভোটের ও রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা অনেক ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করেছি। ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে তৎকালীন ডাকসুর ভিপি ছাত্রলীগ নেতা আ.স.ম আব্দুর রব বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন, ৩রা মার্চ ছাত্রলীগ নেতা শাহাজান সিরাজ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করে শোনান, ২৩ মার্চ পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবসে যেদিন পুর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানে পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করার কথা কিন্তু সেদিন ছাত্রলীগ নেতা ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে এ দেশের মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য অনুপ্রেণিত করেছিলেন। আজকে স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে আমরা বিতর্ক করে থাকি। কিন্তু মূলত স্বাধীনতার ঘোষণা তো ৭১’র ২ মার্চ জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ৩রা মার্চ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ ও ২৩ মার্চ পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবসে পুনরায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমেই ঘোষণা করা হয়েছিলো। স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও আমরা প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন করতে পারিনি। দেশ আজ ঘুষ, দুনীতিতে ভরে গিয়েছে। মানুষ তাদের ভোট পছন্দের প্রার্থীকে দিতে পারে না। প্রশাসনের সহযোগিতায় দলীয় ক্যাডাররা ভোট জোর করে নিয়ে নেয়। ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়া লাগে না। সঠিক কথা বলার স্বাধীনতা নেই। বললেই গুম আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশি নির্যাতন শিকার হতে হয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যেমন পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলো, তেমনই বর্তমানে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে, ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধ করতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে শক্তিশালী করে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসারের উপস্থাপনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আকসিজুল ইসলাম রতন, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কারশেদ আলম, আলমডাঙ্গা উপজেলা জাসদের সভাপতি গোলাম সরওয়ার, সাধারন সম্পাদক আনিসুজ্জামান আনিস, জাতীয় শ্রমিক জোট এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম লুল্লু, আলমডাঙ্গা পৌর জাসদের সভাপতি মিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ডালিম হোসেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা জাসদের সভাপতি আবুল হোসেন ম-ল, দামুড়হুদা উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক মাইনুদ্দিন। শেষে আবুল বাসার বিশ^াসকে সভাপতি, হিমেল খানকে সিনিয়র সহসভাপতি, আফ্রিকি ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক, মাহাবুবুর রহমানকে সাংগাঠনিক সম্পাদক, রাজিব হোসেনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ) চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটি গঠন করা হয়।