চুয়াডাঙ্গায় নবজাতককে উদ্ধার করে মায়ের কোলে দিলো পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় আইন না মেনে দত্তক নেয়া নবজাতক উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে দামুড়হুদার গোপালপুর গ্রাম থেকে উদ্ধারের পর নবজাতককে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে মায়ের কোলে। একইসাথে দত্তক নিতে আগ্রহী ওই দম্পতিকে আইনী প্রক্রিয়ায় নবজাতক দত্তক নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সদর থানার ওসি। শনিবার ভুমিষ্ঠ শিশু বর্তমানে শহরের উপশম নার্সিং হোমে তার মায়ের কাছে রয়েছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের এক যুবতি গত শনিবার প্রসব বেদনা নিয়ে জেলা শহরের উপশম নার্সিং হোমে ভর্তি হন। ওইদিন বিকেলে তিনি কন্যাসন্তান জন্ম দেন। রাতে গোপালপুর গ্রামের রিপন আলী ও তার স্ত্রী লিপা নার্সিং হোম থেকে সদ্য ভুমিষ্ঠ নবজাতককে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান। পরদিন অর্থাৎ গতকাল রোববার বিকেলে গুঞ্জন ওঠে উপশম নার্সিং হোম থেকে নবজাতক বিক্রি করা হয়েছে। এমনকি ২ লাখ টাকাও লেনদেন হয়েছে বলে শোনা যায়। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই গোপাল চন্দ্র ম-ল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওই ক্লিনিকে গিয়ে খোঁজখবর নেন। টাকা নিয়ে সন্তান বিক্রির কোন প্রমাণ না পেলেও দত্তকের বিষয়টির সত্যতা পায় পুলিশ। পরে রোববার রাত ৯টার দিকে গোপালপুর গ্রাম থেকে নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে দেয়া হয়। রিপন-লিপা দম্পতিকে থানায় নিয়ে আইনী প্রক্রিয়ায় দত্তক নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
রিপন-লিপা দম্পতি জানিয়েছেন, দীর্ঘ ১২ বছর দাম্পত্য জীবনে তাদের কোনো সন্তান হয়নি। এক আত্মীয়ের মাধ্যমে তারা খবর পান পাশের গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা এক যুবতি গর্ভবতী। সন্তানের ভরনপোষণ করার ক্ষমতাও নেই। পরে ওই যুবতির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সন্তান দত্তক দিতে রাজি হন। পরে তাকে শহরতলীর দৌলাতদিয়াড়ের একটি ভাড়াবাড়িতে রেখে গর্ভকালীন চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। শনিবার প্রসব বেদনা উঠলে তাকে উপশম নাসিং হোমে ভর্তি করেন ওই দম্পতি। বিকেলে সন্তান প্রসবের পর ওই যুবতির সম্মতিতেই নবজাতককে বাড়ি যান বলেও জানিয়েছেন তারা।
প্রসূতি ওই যুবতি জানান, আমি গর্ভবতী হওয়ার পরপরই আমার স্বামী আমাকে ছেড়ে চলে যায়। তার কোনো খোঁজখবর নেই। আমি নিজেই অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। আমার অনাগত সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এবং তাদের আগ্রহ দেখে আমার সন্তানকে দত্তক দিতে রাজি হই। আমার কাছে থাকার চেয়ে তাদের কাছে থাকলে আমার বাচ্চা অনেক ভালো থাকবে।
সদর থানার ওসি আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান বলেন, গোপালপুরের ওই দম্পতি রিপন ও লিপাকে থানায় নিয়ে আইনী প্রক্রিয়ায় সন্তান নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। মৌখিকভাবে বা টাকা-পঁয়সার মাধ্যমে সন্তান দত্তক নেয়া আইনত দ-নীয়, এ বিষয়ে তাদের অবহিত করা হয়েছে।

 

Comments (0)
Add Comment