স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় গোল্ড কিংস জুয়েলার্সে প্রতারণার ৯ মাস আগে করে আবারও প্রতারণা করতে এসে ধরা পড়েছে হাসিনা নামের এক নারী। পরে তাকে পুলিশে দেয়া হয়। গোল্ড কিংস জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান সাজু বলেন, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই দুপুর ১১টায় হাসিনা তার প্রতারণা চক্রের অপর একজন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে আমার জুয়েলার্সে প্রবেশ করেন। প্রবেশ করার পর বিভিন্ন গয়না দেখে দাম দর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে এক ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ও আট আনা ওজনের ঝুমকো পছন্দ করেন। একই সাথে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন ২২ ক্যারেটের একভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন। এই চেইনটি বিক্রি করে অন্য গয়না ক্রয় করতে চেয়েছিলেন। প্রতারণার অংশ হিসেবে আমাকে দু-নারী বারবার জুয়েলার্সের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বিভিন্ন গয়না নিয়ে আসার জন্য ব্যস্ত রাখে। এক পর্যায়ে নিজের সেই গয়নাসহ আমার গোল্ড কিং জুয়েলার্সের দুটি গণনা নিয়ে কৌশলে চম্পট দেয় তারা। কিছুক্ষণ পরেই আমি বুঝতে পারি কতো বড় ক্ষতি হয়েছে। তৎকালীন বাজারে এই ভরি স্বর্ণের দাম ছিলো প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। সঙ্গে সঙ্গে আমি দোকান থেকে বেরিয়ে তাদেরকে আর খুঁজে পায়নি। তবে আমি সেই সময় ওই নারীর ফুটেজ সংগ্রহ করে রেখেছিলাম সিসিটিভি থেকে।
বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে সেই সময় মিজানুর রহমান সাজু সেই ফুটেজ কাজে লাগে। দেখে দীর্ঘ নয় মাস পর গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় সেই প্রতারক নারী হাসিনা ও তার অপর একজন সহযোগীকে নিয়ে গোল্ড কিং জুয়েলার্সের পাশ দিয়ে সবুজ জুয়েলার্সে যেতে দেখেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য সাজু তার সিসিটিভির ফুটেজ আরো একবার চেক করেন। ফুটেজ চেক করার পর নিশ্চিত হয়ে বেরিয়ে দেখেন পাশের সবুজ জুয়েলার্সে একটি আংটি ক্রয়ের জন্য দাম-দর করছেন।
মিজানুর রহমান সাজু কালবিলম্ব না করে ওই নারীকে দ্রুত জনগণের সহায়তায় ধরে ফেলেন। কিছুটা উত্তম মাধ্যম দেয়ার পরপরই তাকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায়। ওই প্রতারক নারীর সঙ্গে থাকা অপর নারীও সুযোগ বুঝে সটকে পড়েন। প্রতারণাকারী নারীর তার নাম ঠিকানা বলতে গিয়ে বলেছেন নাম: হাসিনা, স্বামীর নাম: রুস্তম আলী, গ্রামের নাম মিঠিইপুকুর, উপজেলা পীরগঞ্জ, জেলা-রংপুর। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গোল্ড কিংস জুয়েলার্সের মালিক মিজানুর রহমান সাজু প্রতারক নারীর বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত হাসিনা এখন সদর থানায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। তবে চুয়াডাঙ্গার জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের অনেকে বলছেন, এই নারী প্রতারণাকারী চক্রের অন্যতম সদস্য। তাকে ভালোমতো জিজ্ঞাসাবাদ বা রিমান্ডে নিলে প্রতারণাকারী চক্রের অনেককেই গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ খালিদুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।