মাথাভাঙ্গা মনিটর: বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮০ লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে লাতিন আমেরিকা ও যুক্তরাষ্ট্রে। অনেক দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ঘাটতি থাকায় প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশে^ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিলো ৮১ লাখ ৫০ হাজার ৯৩১ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৮৯২ জনের। সুস্থ হয়েছে ৪২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭ জন। শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় আগের মতোই বিশ্বে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে ২১ লাখ ১৩ হাজার ৯০১ জন শনাক্ত হয়েছেন, যা বিশ্বের মোট আক্রান্তের ২৫ শতাংশ। লাতিন আমেরিকায় করোনা ভাইরাসের বিস্তার দ্রুতগতিতে বাড়ছে। রয়টার্সের হিসাবে সেখানে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিশ্বের মোট সংখ্যার ২১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কভিড-১৯ শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যার বিবেচনায় লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ হটস্পট হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সেখানে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮ লাখ ৮৮ হাজারের বেশি। রয়টার্স বলছে, ব্রাজিলের সরকারি হিসাবে মহামারীতে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার হলেও প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম এই দেশে পরীক্ষার ব্যবস্থা অপ্রতুল হওয়ায় অনেক আক্রান্তকেই শনাক্ত করা যায়নি, আর শনাক্ত না হওয়া অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা তাদের। কভিড-১৯ এ যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা এক লাখ ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং প্রাদুর্ভাব শুরুর তিন মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও দেশটি পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়েই চলছে। গত কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ এলাকায় নতুন রোগীর সংখ্যা কমতে দেখা গেলেও এখন অনেক এলাকা থেকে রেকর্ড সংখ্যক নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর আসছে। সেসব এলাকায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাও বেড়ে গেছে। তাতে যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণের ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ শুরুর শঙ্কা দেখছেন অনেকে। এ ক্ষেত্রে সংক্রমণের প্রথম ঢেউ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতাকে কারণ হিসেবে দেখছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাই সবাইকে মাস্ক পরতে, ভিড় এড়িয়ে চলতে এবং দূরত্ব মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। চীনেও করোনা ভাইরাসের নতুন ক্লাস্টার পাওয়ার খবর এসেছে। তিন মাসের বেশি সময় লকডাউনে থাকার পর দেশটি যখন অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা শুরু করেছে, তখনই রাজধানী বেইজিংসহ বিভিন্ন জায়গায় নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে। এর আগে প্রায় দুই মাস বেইজিংয়ের ভিতরে নতুন সংক্রমণের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
২৪ দিন পর নতুন রোগী মিললো নিউজিল্যান্ডে: নিজেদের ‘করোনা ভাইরাস মুক্ত’ দেশ দাবি করে বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার কয়েকদিন পর কভিড-১৯ এ আক্রান্ত দুই রোগীকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে নিউজিল্যান্ড। আক্রান্ত দুই নারীই সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে এসে আইসোলেশনে আছেন। এর ফলে টানা ২৪ দিনের বিরতি শেষে নিউজিল্যান্ডে নতুন কারও দেহে প্রাণঘাতী ভাইরাসের উপস্থিতি মিললো। নতুন সংক্রমণের এ তথ্যকে দেশটির জন্য বড় ধরনের ধাক্কা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। নতুন কিংবা চিকিৎসাধীন কোনো কভিড-১৯ রোগী না থাকায় গত সপ্তাহেই সীমান্ত বাদে দেশের ভিতরকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক সব বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে নিউজিল্যান্ড মহামারী পূর্ববর্তী স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার ঘোষণা দিয়েছিলো। অবশ্য প্রবাসীরা ফিরলে ভবিষ্যতে নতুন করে আক্রান্ত শনাক্ত হতে পারে বলে সে সময়ই নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা দেশবাসীকে সতর্ক করেছিলেন। যুক্তরাজ্য থেকে আসা দুই নারীর বয়স ৩০ ও ৪০ এর ঘরে। মৃতপ্রায় এক আত্মীয়কে দেখতে তাদেরকে অকল্যান্ড থেকে ওয়েলিংটনে যাওয়ার অনুমতিও দেওয়া হয় বলে নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য মহাপরিচালক অ্যাশলে ব্লুমফিল্ড জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য থেকে দোহা ও ব্রিসবেন হয়ে গত ৭ জুন এ দুই নারী নিউজিল্যান্ড নামেন। এরপর থেকে তারা অকল্যান্ডে আইসোলেশনে ছিলেন।