গ্রাম আদালতকে কার্যকর করতে সকলকে সহযোগিতা করতে হবে

চুয়াডাঙ্গায় গ্রাম আদালত বিষয়ে অংশীজনদের সাথে সমন্বয় সভায় জেলা প্রশাসক

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় ৪০টি ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে প্রচার-প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনায় স্থানীয় অংশীজনদের সাথে সমন্বয়সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমন্বয় সভাপটি অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয়সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সমন্বয় সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারণা চালাতে হবে। গ্রাম আদালতকে কার্যকর করতে সকলকে সহযোগিতা করতে হবে। আমরা চেষ্টা করবো যার যার অবস্থান থেকে প্রচারণা করবেন। ফলে থানা, পুলিশ ও কোর্টের ওপর চাপ কমবে এবং মানুষের দুর্ভোগ কমবে। গ্রাম আদালতে স্বল্প সময়ে, অল্প খরচে এবং অতি সহজে বিরোধ ও বিবাদ নিষ্পত্তির সুযোগ রয়েছে। পক্ষগণ নিজের কথা নিজে বলতে পারেন, আইনজীবী দরকার হয় না। দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণ বিশেষ করে নারী, প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সহজে বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ পায়। সেজন্য অল্প সময়, স্বল্প খরচে ও সঠিক বিচার পেতে সকলকে গ্রাম আদালতে যেতে আহ্বান জানাচ্ছি। সভায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সহকারী কমিশনার আবদুল্লাহ আল নাঈম, পুলিশ সুপারের পক্ষে পরিদর্শক আতিকুর রহমান, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের পক্ষে সাঈদ হাসান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাকসুরা জান্নাত, জেলা তথ্য অফিসার শিল্পী মন্ডল, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক জহির রায়হান, ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়ক মানিক ম্যাক্সিমিলিয়ান রুগা, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, ভিশন ক্যাবলের প্রতিনিধি সাইদুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. রফিকুল ইসলাম ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সনি, মো. সাইদুজ্জামান (প্রকল্প সমন্বয়কারী চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা), রবিউল ইসলাম বকুল (প্রকল্প সমন্বয়কারী দামুড়হুদা ও জীবননগর) এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের মেহেরপুর সদরের সমন্বয়কারী আলমগীর কবির সমন্বয় সভায় প্রকল্পের কার্যক্রম বিষয়ে প্রেজেন্টশন উপস্থাপন করেন। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চুয়াডাঙ্গার ৪০টি ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আবেদনকারীকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ফৌজদারী মামলায় ১০ টাকা ও দেওয়ানী মামলায় ২০ টাকা ফিস দিয়ে আবেদন করতে হবে। ফৌজদারী মামলায় বিরোধ সংঘটিত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে এবং দেওয়ানী মামলায় বিরোধ সংঘটিত হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। গ্রাম আদালত অনধিক ৩ লাখ টাকা মূল্যমানের ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিরোধ নিষ্পত্তি মামলা করতে পারে। গ্রাম আদালতে আইনজীবী নিয়োগের বিধান নেই। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে মার্চ পর্যন্ত ১৪১টি মামলার মধ্যে ১২১টি মামলা নিষ্পত্তি করেছে। ২০টি চলমান রয়েছে। চুয়াডাঙ্গার আদালত থেকে ৫২টি মামলা গ্রাম আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্প ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত চলমান থাকবে।