গাংনীতে মরসি ঝড়ে ভেঙ্গেছে নিরীহ কৃষকের সংসার

গাংনী প্রতিনিধি: ১৭ বছর ধরে সংসার করছেন। সংসার সুখি রাখতে দিন রাত মাথার ঘাম পায়ে ফেলছিলেন তিনি। দাম্পত্য জীবনে এক সন্তান রয়েছে। তিন সদস্যদের পরিবারে বেশ আয়েশেই কেটে যাচ্ছিল তাদের সংসার। কিন্তু ভেতরে ভেতরে কাল মেঘ জমে কখন যে সাইক্লোন ঝড়ের রুপ নিয়েছে তা জানতেন না নিরীহ কৃষক। কারণ তিনি দিন রাতের বেশিরভাগ সময় কৃষি কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। গত সোমবার (২১ এপ্রিল) রাত এগারটার দিকে ওই কৃষকের ঘরে তার স্ত্রীর সাথে রঙ্গলীলায় সময় কাটাচ্ছিলেন প্রতিবেশী মরসি ইসলাম। এ অভিযোগে প্রতেবেশী বাইরে থেকে দরজা আটকে দেয়। ঘরের মধ্যে আটক থাকায় অবস্থায় খবর যায় কৃষকের কাছে। তখন তিনি মাঠের ক্ষেতে সেচ দিচ্ছিলেন। এই মরসি ঝড়ে শেষ পর্যন্ত কৃষকের সাজানো গোছানো সংসার ভেঙে গেছে। তাই মরসি ঝড়ে কৃষকের সব শেষ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন এলাকার মানুষ। ঘটনাটি গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়ীয়া গ্রামে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মরসি ইসলাম স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি ৩ সন্তানের জনক। কাথুলী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানার দোকানের ম্যানেজার কাম কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। চেয়ারম্যানের কাছে থাকায় মরসি ইসলাম কাউকে পরোয়া করেন না। নানা অপকর্ম করেও বহাল তবিয়তে নিজের অবস্থানেই রয়েছেন। পেশিশক্তির বলে সেই রাতেও সে নিজেকে রক্ষা করেছে। গ্রামের মানুষ মরসি ইসলামের বিচার করতে চাইলেও প্রভাবশালীদের প্রভাবে তা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত ভেঙেছে নিরীহ কৃষকের সংসার।
জানা গেছে, মরসি ইসলাম ও ওই নারী এক সাথে ধরা পড়ার পর কৃষককে খবর দেয়া হয়। তিনি বাড়িতে আসার আগেই মরসি ইসলামের লাঠিয়ালরা সেখানে উপস্থিত হয়। মরসি ইসলামকে জোরপূর্বক বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত হয় সমঝোতা। মরসি ইসলাম এবং ওই নারী বিয়ে করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। দীর্ঘদিন সংসার করেও স্ত্রী ব্যাভিচার করেছে তাই সংসার করতে নারাজ ছিলেন ওই কৃষক।
জানা গেছে, কৃষকের স্ত্রী এবং মরসি ইসলাম বিয়ে করার ইচ্ছে প্রকাশ করায় স্থানীয়রা তা মেনে নেয়। রাতেই ভুক্তভোগী কৃষক এবং তার স্ত্রীর তালাক হয়। পরবর্তীতে মুরসি ইসলাম তাকে বিয়ে করবে এমন সিদ্ধান্ত হয়। তবে ওই নারীর ক্ষতিপূরণ হিসেবে মুরসি ইসলামকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন সমাজপতিরা। কয়েকদিনের মধ্যে টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই টাকা দেয়া হয়েছে কি না এবং তাদের বিয়ে হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ওই রাতেই নারীকে তার পিতার পরিবারের লোকজন নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে ভুক্তভোগী কৃষক কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রভাবশালী মরসি ইসলাম তার সাজানো গোছানো সংসার কিভাবে ধ্বংস করেছে তার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, এ অবস্থার মধ্যে কিভাবে তার (স্ত্রীর) সাথে সংসার করা যায়। এ কারণে তালাক দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তবে মোবাইলে যোগাযোগ করেও মুরসি ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মিডিয়ায় কথা বলতে রাজি হননি ওই নারী। তবে ঘটনাটি এলাকার মানুষের মাঝে মুখরোচক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মুরসি ইসলামের অপকর্ম নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা।
জানতে চাইলে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বানি ইসরাইল বলেন, অভিযুক্ত পরিবারটি যদি আইনগত সহায়তা চায় তাহলে তা দেয়া হবে। তবে এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।