গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চোখতোলা মাঠ এলাকায় মিঠুন নামের এক ট্রাক চালককে গতকাল সোমবার সকালে বেধড়ক মারপিঠ করেছেন এক বিজিবি সদস্য। নির্মাণাধীন রাস্তার যানজটে আটকে গিয়ে নিরপরাধ ট্রাক চালককে পিটিয়ে সমালোচনায় পড়েছেন ওই বিজিবি সদস্য। এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাকর্মীদের মাঝে। ট্রাক চালক মিঠুন মেহরপুরের বামনপাড়ার ফতের আলীর ছেলে। অপরদিকে অভিযুক্ত বিজিবি সদস্যের নাম রফিক বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীসূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গাংনী উপজেলার চোখতোলা নামক স্থানে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে। একদিকে কাজ চলমান অন্যদিকে ওয়ানওয়ে হিসেবে যানবাহন চলাচল করছে। তবে নির্মাণ কাজের ধীরগতি আর অব্যবস্থাপনায় বৃষ্টিতে রাস্তা কাদাপানিতে পরিণত হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় প্রতিদিন যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার দুপুরে এই যানজটে পড়েন ট্রাক চালক মিঠুন। তিনি মেহেরপুর থেকে নাটোরে যাচ্ছিলেন। এ সময় বামন্দীর দিক থেকে গাংনীতে যাচ্ছিলেন মোটরসাইকেলে দুই বিজিবি সদস্য। তারা পোশাক পরা অবস্থায় ছিলেন। যানজট পার হতে গিয়ে বাধা পড়ায় বিজিবি সদস্য ক্ষিপ্ত হন ট্রাক চালক মিঠুনের ওপর। এক পর্যায়ে তাকে বেধড়ক মারপিঠ করেন। মোবাইলে মারপিঠের দৃশ্য ধারণ করেছেন এক পথচারী। উত্তেজিত বিজিবি সদস্য রফিক তার মোবাইল কেড়ে নিয়ে মারধর করে ভিডিও ডিলেট করেন। এক পর্যায়ে পথচারী অনেকে বিষয়টির প্রতিবাদ করলে বিজিবি সদস্যরা সেখান থেকে সটকে পড়েন। তবে ভিডিও ও ছবি ডিলেট করলেও মোবাইলের রিসাইকেল বিনে রয়ে যায়। পরে সেই ভিডিও ছবি ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে।
এ বিষয়ে মিঠুন বলেন, বিজিবি সদস্য বিনা কারণেই আমাকে মারধর করেছেন। তিনি ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়ে আমার সাথে চরম অন্যায় করেছেন। অন্যায়ভাবে লাথি, চড়থাপ্পড়, কিল মারলেও বিজিবি সদস্যসহ অন্যরাও চেয়ে চেয়ে দেখেছেন। কারও কিছুই করার ছিলো না। আমি তার বিচার চাই।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ। মেহেরপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এভাবে মারধরের বিষয়টি আমারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। আমরা এর সুবিচার চায়। ট্রাক চালক ভাড়া থেকে ফিরে আসলেই আমরা আমাদের কার্যক্রম শুরু করবো।
তবে এ ব্যাপারে বিজিবির স্থানীয় ক্যাম্পগুলোতে খোঁজ নিয়ে ওই বিজিবি সদস্যর পরিচয় মেলেনি। বিজিবির দায়িত্বশীল কেউ এ বিষয়ে কিছুই জানে না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।