স্টাফ রিপোটার: দেরিতে হলেও কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ মিলটি বাঁচাতে সময়পোযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আখচাষের সঠিক হিসেব মেলাতে গঠন করা হয়েছে সার্চ কমিটি। এতে সিডিএদের হয়েছে গাত্র জ্বালা। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে করেছে বিক্ষোভ। তাতে থমকে যাচ্ছে না চিনিকল কর্তৃপক্ষ। মিলের সুযোগ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেনের সঠিক দিক-নির্দেশনায় অনড় রয়েছে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। কেরুজ চিনি কারখানা বেশ কয়েক বছর ধরেই লোকসান গুনছে। কেরুজ কমপ্লেক্সের বিভিন্ন বিভাগ থেকে মোটা অংকের মুনাফা অর্জন করলেও তা থেকে চিনি কারখানার লোকসান পুষাতে বেশ হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে। আখচাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে সকল ধরণের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মমুখি হওয়ার ব্যাপারে জোর দেয়া হয়েছে। চিনি কারখানায় মুনাফা অর্জন না হলেও বড় ধরণের লোকসান কমাতে বেশ নড়েচড়ে বসেছেন কর্তাবাবুরা। এরই মধ্যে ব্যর্থ মহাব্যবস্থাপক কৃষি গিয়াস উদ্দিনকে অন্যত্র বদলী করা হয়েছে। ১৯ মার্চ মোবারকগঞ্জ চিনিকল থেকে বদলী হয়ে কেরুজ চিনিকলে মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) আশরাফুল আলম ভুইয়া যোগদান করেছেন। লোকসান কমাতে চিনিকলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পর্ষদ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে দিন চারেক আগে মাঠের আখ চাষের সঠিক হিসাব-নিকাশের জন্য গঠন করা হয়েছে ৬টি সার্চ কমিটি। এ কমিটির দেয়া প্রতিবেদনের ওপর নির্ধারণ করা হবে আগামী আখ মাড়াই মরসুমের লক্ষ্যমাত্রা। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থতার বোঝা বইতে হবে না মিল কর্তৃপক্ষকে। এ খবর পেয়েই তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেছে সিডিএরা। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে সিডিএ অফিসে সমবেত হয়ে বের করে বিক্ষোভ। মহাব্যবস্থাপক (কৃষি)’র বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়া হয়। এ বিষয়ে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন বলেছেন, এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের প্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় যে যে পদক্ষেপ প্রয়োজন তা নেবো। বিক্ষোভ করে ফায়দা হবে না। যারা দুর্নীতি করতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে পিছুপা হবো না। মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) আশরাফুল আলম ভুইয়া জানান, আখ রোপণের সঠিক হিসাব জানতেই এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তির নয় প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে হিসাব নির্ধারণ জরুরী। কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ সবুজ বলেন, চিনিকল কর্তৃপক্ষ এ ধরণের ব্যবস্থায় আমাদের দ্বিমত নেই। রোজা রেখে প্রচন্ড এ গরমে না করে কয়েকদিন পর করলেই ভালো হতো। এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা গেছে, সিডিএদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের অভিযোগ তারা সরেজমিনে মাঠে না গিয়ে আখ রোপণের হিসাব কষেন। ফলে তাদের দেয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয় না কোনো মরসুমেই। কারণ হিসেবে জানা গেছে, মাঠে যে পরিমাণ আখ রোপণ করা হয়, নিজেরা বাহবা পেতে তার দ্বিগুন হিসেব দেন চিনিকল কর্তৃপক্ষকে। মিল কর্তৃপক্ষ সে মোতাবেক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে মাড়াইয়ের ক্ষেত্রে হোচট খেতে হয়। অর্জিত হয়না লক্ষ্যমাত্রা। সুনাম হয় ক্ষুণœ। এ ধরণের পদক্ষেপে চিনিকল কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।