শিপলু জামান: দুলাভাই আরজান আলী যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ব্যবসা-ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক। আর ছাত্র এহসানুল হক জিহাদ একই কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্র ও শিক্ষক মিলে শুরু করেছিলেন চুইঝাল চাষ। এখন সেই চাষে সফলতা দেখতে পাচ্ছেন শিক্ষক ও ছাত্র।
সরেজমিনে উপজেলার হাসানহাটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ২ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন চুইঝালের। এছাড়াও ৫ শতক জমিতে রয়েছেন চুইঝালের নার্সারি।
অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র এহসানুল হক জিহাদ জানান, করোনাকালে কলেজ বন্ধ থাকায় কিছু একটা করার পরিকল্পনা থেকে চুইঝাল চাষ শুরু করি। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে বোনের বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে গিয়ে দেখতে পান চুইঝালের চাষ। এরপর খোঁজখবর নিয়ে চুইঝালের চাষের প্রতি আগ্রহী হই। প্রথমে ৩৫ টাকা দিয়ে একটি চারা কিনে আনেন। বোনের বাড়ি থেকে কিনে আনা চারাটি বাড়িতে লাগানোর এক বছর পর মূল্য হয় প্রায় পাঁচ হাজার টাকা।
তিনি আরও জানান, এরপর করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে বাণিজ্যিকভাবে চুইঝালের চাষ শুরু করেন। ডুমুরিয়া থেকে কাটিং এনে ২০০ চারা তৈরি করেন নার্সারিতে। সেই চারা দিয়ে বর্তমানে দুই বিঘা জমিতে চুইঝালের চাষ করছেন। জমিতে প্রায় ৪০০ গাছ আছে। এছাড়াও ৫ শতক জমিতে তৈরি করেছেন নার্সারি। বর্তমানে নার্সারীতে প্রায় ২০ হাজারের মতো চারা রয়েছে। প্রতি পিস চারা তৈরিতে খরচ হয় ১০ থেকে ১৫ টাকা। বাজারে চারার মূল্য বেশি থাকলেও তার সে চারা প্রতিপিস ৩৫ টাকা করে বিক্রি করছেন যার বাজার মূল্য প্রায় ৭ লাখ টাকা ।
আরজান আলী জানান, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এরমধ্যে জিহাদকে চুইঝালের চাষের কথা বলি। সে রাজি হওয়ায় এ অঞ্চলে চুইঝালের চাষ শুরু হয়েছে। প্রতিমাসে চুইঝাল চাষ করে অনায়াসে ৫০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। জিহাদের সাথে আমিও চাষে সময় দিই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সময় দিতে পারছি। এ চাষে সময় কম দিলেও সমস্যা নাই। নার্সারি থেকে চুইঝালের চারা দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। বর্তমানে নার্সারিতে ৪ জন বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রতিদিনি তারা ৫০০ টাকা করে মজুরি পাই।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার শিকদার মো. মোহায়মেন আক্তার জানান, তার জানামতে উপজেলায় এটিই চুইঝালের প্রথম চাষ। তারা যোগাযোগ করলে যেকোনো ধরণের পরামর্শ ও সহযোগিতা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে করা হবে।