আফজালুল হক: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে মালামালসহ ইঞ্জিনচালিত পাখিভ্যান রেখে করোনার টিকা দিতে দিয়েছিলেন বৃদ্ধ আব্দুর রহমান (৫৫)। মিনিট ১৫ পর ফিরে এসে দেখেন ভ্যানটি আগের স্থানে নেই। চোরে চুরি করে নিয়ে গেছে। উপার্জনের একমাত্র ভ্যানটি হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অসুস্থ বৃদ্ধ আব্দুর রহমান। মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর ১২ টার দিকে সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। পরে হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরায় ভ্যানটি নিয়ে যেতে দেখা গেলেও চোর শনাক্ত করা যায়নি। বৃদ্ধ আব্দুর রহমান চুয়াডাঙ্গা শহরের বাগানপাড়ায় ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন। বড় ছেলে দশম ও ছোট ছেলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
আব্দুর রহমান জানান, গতকাল বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে জরুরি বিভাগের সামনে ভ্যানটি রেখে ভবনের দ্বিতীয়তলায় করোনার টিকা নিতে গিয়েছিলাম। সেখানে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যও ছিলো। সেই ভরসায় ভ্যানটি রেখে যায়। প্রায় ২০ মিনিট পর টিকা দিয়ে এসে দেখি ভ্যানটি নেই। ওই ভ্যানে প্রায় ১০ হাজার টাকার পোশাক ছিলো। তিনি আরও বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পাখিভ্যানটি কিনেছিলাম। এখনো কিস্তি শোধ হয়নি। এই ভ্যানে বিভিন্ন পোশাক নিয়ে শহর-গ্রামগঞ্জে ফেরি করে বিক্রি করি। এই দিয়ে ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধ করাসহ কোনোরকম টেনেটুনে সংসার চলতো। দীর্ঘদিন যাবত আমি অসুস্থ। ভারি কোন কাজ করতে পারিনা। এখন আমি কিভাবে কিস্তি পরিশোধ করবো? দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে এখন পথে বসতে হবে। আমি শেষ হয়ে গেলাম। কে পাশে দাঁড়াবে আমার? আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। খবর পেয়ে বৃদ্ধের বড় ছেলে আবুল কালাম রাব্বি তার অসুস্থ বাবাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যায়। এদিকে হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরায় ভ্যানটি নিয়ে যেতে দেখা যায়। ক্যামেরার উপস্থিতি থাকার কারণে মুখ নিচু করে ভ্যানটি নিয়ে যায়। ফলে শনাক্ত করা যায়নি।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি চুরির বিষয়টি জানি না। কেউ অভিযোগ বা জিডি করেনি।